সংগৃহীত
পরিবেশ

ফাঁদ পেতে শিকারের পর চলে অতিথি পাখির হোম ডেলিভারি

নড়াইল প্রতিনিধি

শীত এলেই রঙ-বেরঙের নাম না জানা অনেক রকম পাখিতে ভরে যায় দেশের জলাশয়, হাওড়, বিল ও পুকুর। আদর করে আমরা সেগুলোকে বলি ‘অতিথি পাখি’। ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাতসহ প্রকৃতির প্রতিকূলতা থেকে বাঁচতে তারা পাড়ি দেয় হাজারো মাইল পথ। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি পাখি আসে বাংলাদেশে।

নড়াইলের বিল ও জলাশয়গুলোতে হালকা শীতের আমেজে প্রতিবছরের মতো দল বেঁধে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি। পানি কমে আসা বিল ও জলাশয়গুলোতে খাবারের সন্ধানে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সঙ্গে আসছে দেশীয় প্রজাতির পাখিও। আর এই সুযোগে ফাঁদ পেতে নির্বিচারে পাখি নিধন করছে শিকারিরা। এসব পাখির একটি বড় অংশ বিষটপ, জাল, বড়শিতে আটকে শিকারের খাঁচায় বন্দি হচ্ছে। সেগুলো আবার দেদার বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার হাটে-বাজারে। এমনকি মোবাইল ফোনে অর্ডার করলেই যথারীতি একটু গোপনে ব্যাগভর্তি করে মোটরসাইকেলে ক্রেতার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে অতিথি পাখি।

জানা যায়, মূলত নভেম্বর মাস থেকে শুরু করে মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত অবস্থান করে এসব পাখি। শীত শেষ হলে আবার ফিরে যায় তারা। এবছরও ব্যতিক্রম ঘটেনি। অন্যান্য বছরের মতো এবারো মাছে বিষটপ, জাল ও বড়শি দেওয়ার পাশাপাশি প্রযুক্তির ফাঁদ পেতে অভিনব কৌশলে পাখি শিকার হচ্ছে।

এ বছর শীতের আগেভাগেই নড়াইলের চাঁচুড়ী, পাটেশ্বরী, ইছামতি, কাড়ার, নলামারা, কুমড়ি-তালবাড়িয়া, পাঁচুড়িয়া ও গোপালপুর-বগুড়ার বিল, জলাশয় এবং হাজারো চিংড়ি ঘের এলাকায় অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে। মূলত এসব জলাশয়ে শীত মৌসুমে অল্প পানিতে মাছ শিকারের জন্য অসংখ্য পাখি আসে। বিদেশি পাখিদের সঙ্গে থাকে-বালি হাঁস, কালকোচ, কায়েম, ডুঙ্কর, পানকৌড়ি, পাতাড়ি হাঁস, হাঁস ডিঙ্গি, কাদা খোঁচা, খয়রা, চেগা, কাচিচোরা, মদনটাক, শামুখখোলা ও বকসহ নানা প্রজাতির পাখি। বিকাল থেকেই বিভিন্ন প্রজাতির এসব পাখি দল বেঁধে বিল এলাকায় গিয়ে খাদ্য সংগ্রহে নেমে পড়ে। আর সেখানে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকে শিকারি চক্র।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যেখানে পাখিদের আনাগোনা বেশি সেসব বিল ও জলাশয়ের বৃহৎ এলাকাজুড়ে জালের ফাঁদ পাতে শিকারি চক্র। এরপর অতিথি পাখিদের ডাউনলোড করা ডাক পোর্টেবল সাউন্ড-বক্সে ঢুকিয়ে বাজানো শুরু করে। আর ওই ডাক শুনে সতীর্থদের নিরাপদ অবস্থান মনে করে শিকারির পাতা ফাঁদে নামতে শুরু করে অতিথি পাখিরা। আর এভাবে অভিনব কায়দার ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আটকা পড়ছে শিকারির ফাঁদে।

কয়েকজন পাখি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী বাজার ও রঘুনাথপুর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অতিথি পাখি। পাশাপাশি অগ্রিম অর্ডারের মাধ্যমে যথারীতি এসব পাখি বিক্রেতাদের বাড়িতে বাড়িতে পোঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি জোড়া ডুঙ্কর ও কাঁদা খোচা পাখি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কালকোচ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কাইয়ুম পাখি ৭০০ থেকে ৮০০ ও বালিহাঁস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া আকার ভেদে পাখি সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

আগামী জাতীয় নির্বাচনে এআই অপপ্রচার মোকাবিলাই বড় চ্যালেঞ্জ 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন জাতীয় নি...

হামাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রশ্নে প্রায় ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি ঘোরবিরোধী

হামাস নিরস্ত্র হোক, চান না ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বেশির ভাগ ফিলিস্তিনি...

‘হ্যাঁ’ ‘না’ পোস্টে সরগরম ফেসবুক 

সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় চলছে ‘হ্যাঁ’ ‘না&rsqu...

সকাল থেকে মেট্রোরেলের চলাচল স্বাভাবিক

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় রাজধা...

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নারী বিশ্বকাপে ইতিহাস দক্ষিণ আফ্রিকার

আক্ষেপ ঘুচল দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের। প্রথমবারের মতো নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফা...

একদিনের ব্যবধানে আবারোও বাড়লো সোনার দাম

দেশের বাজারে এক দিনের ব্যবধানে সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ভরিতে ৮ হাজার ৯০০ টাকা...

ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলা কলি’

সংরক্ষিত নির্বাচনী প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘শাপলা কলি&rsq...

কমিটি বাতিলের দাবিতে ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর...

নরসিংদী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হামলা

নরসিংদীতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।...

বিএনপি বিবাহে রাজি হয়েছে, কাবিননামায় সাইনও করেছে; 'না' বলার অপশন নাই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, "...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা