ঘুরতে সবারই ভালো লাগে। সেই ভ্রমণে যদি কাছের বন্ধুরা থাকে, তাহলে তো আর কথাই নেই। সম্প্রতি বন্ধুদের সঙ্গে থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম সপ্তাহ দুয়েকের জন্য। আমার বন্ধুরা এখন অনেকেই চাকরিতে ঢুকে গেছেন। তাদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার সময় মেলানো অনেক কঠিন। ওদের সময়ের ওপর নির্ভর করে আমি এবার সময় বের করে নিয়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দিনগুলো কেটেছে। এর আগেও আমি একবার থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম। ব্যাংকক, ফুকেট এসব জায়গায় থাকা হয়েছে।
এবার আমি আইল্যান্ডগুলোতে বেশি ছিলাম। কোসামইতে বেশ কিছুদিন থাকা হয়েছে। এর আশপাশের আইল্যান্ডগুলোতে এক দিন এক দিন করে থেকেছি। এবারে থাইল্যান্ডের অন্যরূপ দেখেছি। লোকজন কম ছিল, জায়গাটা একেবারে নিরিবিলি। সেখানকার স্থানীয়রা খুব ভালো। এ কারণে অনেক স্বস্তিতে দিনগুলো কেটেছে। একেবারে নিরিবিলি, ঠান্ডা পরিবেশ– মনটাই এবার ভরে গেছে। কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে সেখানকার দর্শনীয় জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখার চেষ্টা করি। ফুকেটে ওল্ড টাউন বলে একটি জায়গা আছে।
এই জায়গাটা আমার খুব পছন্দের। সেখানে প্রতি রোববার একটি বাজার বসে। বিভিন্ন খাবার, নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। এসবের মধ্যে ট্র্যাডিশনাল আইটেমই বেশি। গতবার যখন গেছি, সেখানে যাওয়ার সময় পাইনি। এ কারণে এবার সেখানে বেশি সময় দিয়েছি। এবার এখানে যেন আসতে পারি– সে রকম পরিকল্পনা করেই যাওয়া হয়েছে। জায়গাটা অনেক কালারফুল। বহু সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে এখানে দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ হয়। সব মিলিয়ে এটি আমার জন্য ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। কোসামইতে যখন ছিলাম, তখন অনেক অ্যাক্টিভিটিস করেছি। সেখান থেকে আমি মালয়েশিয়ায় এসেছিলাম।
আসার পথে কুয়ালালামপুরে এক দিন ছিলাম। সেখানে বেশি ঘুরিনি। আমার কাছে ওই জায়গাটা সেভাবে ভালোও লাগে না। অনেক ক্রাউড জায়গা। আমার কাছে নিরিবিলি স্থান, লোকজন কম– এরকম জায়গা বেশি ভালো লাগে। এ বছর আর কোথাও যাওয়া হবে না– তাই হাতে একটু সময় নিয়েই বেরিয়ে পড়েছিলাম। বিদেশে এলে আমার অনেক অ্যাক্টিভিটিস করতে মন চায়। এবার স্কুবা ড্রাইভ করার খুব ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সাঁতার জানি না বলে করতে পারিনি।
জীবনে অনেক দেশেই যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। এর মধ্যে শুটিংয়ে শুধু অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গিয়েছিলাম। এছাড়া পৃথিবীর যত দেশে গেছি, সব ব্যক্তিগতভাবেই যাওয়া হয়েছে।
শুটিংয়ে দেশের বাইরে যাওয়ার অনেক প্রস্তাব থাকলেও যাইনি। দেশের বাইরে শুটিং আমার জন্য অনেক কষ্টের মনে হয়। বন্ধুদের সঙ্গে বিদেশ গেলে আনন্দটা দ্বিগুণ হয়। আমার কাছে মনে হয়েছে, থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে বন্ধুদের নিয়ে যাওয়াই ভালো।
প্রথম সবকিছু তুলনাহীন। ঘোরার জন্য প্রথমবার কাশ্মীর গিয়েছিলাম। এটি আমার কাছে অন্যকম সুন্দর একটি জায়গা। প্রকৃতি যেন সবকিছু আপন হাতে সাজিয়েছে এখানে। পেহেলগাম, দার্জিলিংও অন্যরকম টানে। নেপাল যেতেও ভালো লাগে।
নেপাল তিনবার যাওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে বেশ কয়েকবারই যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব কমার পরই ভারতে বেশি গিয়েছি। একেকটা ভ্রমণে একেক রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। একবার বন্ধুরা মিলে গ্রুপ ট্যুরে গিয়েছিলাম দার্জিলিংয়ে। এটিই ছিল আমার সবচেয়ে আনন্দদায়ক ভ্রমণ। সেসব দিনের কথা মনে পড়লে স্মৃতিকাতর হয়ে যাই। কাঠমান্ডুতে থামেল নামে একটি জায়গা আছে। সেই জায়গায় চারবার গিয়েছি। নেপালে গেলে সেখানে যাওয়া আমার চাইই চাই। থামেলের প্রতিটি রাস্তা ভালো লাগে। এখানের সবকিছু খুবই রঙিন মনে হয়।
কোনো জায়গায় ঘুরতে গেলে সেখানকার স্থানীয় খাবারে গুরুত্ব দিই। হালাল খাবারের মধ্যে যতটুকু খাওয়া যায়, তা খুঁজে খুঁজে বের করি। মাঝেমধ্যে স্ট্রিট ফুডগুলোও খাই। নতুন খাবারে স্বাদ নিতে ভালো লাগে। সত্যি কথা বলতে কী, আমার ভাত না খেলে খুব একটা সমস্যা হয় না। দুই সপ্তাহ ট্যুরে গেল, এক সপ্তাহ পরই আমার বন্ধুরা ভাত খেতে চায়। আমি উল্টো। নুডলস খেয়েও আরামে কয়েক দিন পার করতে পারি।
শুধু দেশের বাইরে ঘুরে যে খুব আনন্দ পাই তা কিন্তু নয়। দেশেও ঘোরাঘুরির জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম আমার খুব পছন্দের। সিলেট ঘুরতে ভালো লাগে। সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকা ঘুরে অন্যরকম প্রশান্তি মেলে।
আমারকাঙলা/জিজি