শিক্ষা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই পক্ষের মারামারি

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের দুই পক্ষের মারামারির সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা, ফোন কেড়ে নিয়ে সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পর ও তলপেটে লাথিসহ অভিযোগ উঠেছে বিভাগের একাংশ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। রবিবার (১৩ জুলাই) ১০টার দিকে মারধরের বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী তিন সাংবাদিক।

ভুক্তভোগীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জাতীয় দৈনিক আমাদের বার্তার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আরিফ বিল্লাহ এবং একই বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী ও জাতীয় দৈনিক আজকালের খবরের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি রবিউল আলম এবং একই বর্ষের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ও বার্তা২৪ ক্যাম্পাস প্রতিনিধি নূর ই আলম।

অভিযুক্তরা হলেন, অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের আফসানা পারভীন তিনা, নাহিদ, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, রিয়াজ মোর্শেদ, সৌরভ, সোহাগ, সাব্বির, পান্না ও একই বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের অজিল, সাইফুল, মশিউর রহমান ও হৃদয়সহ ৮/১০ জন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহ জানান, ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ বনাম ২০২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফুটবল খেলার এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মারামারি চলাকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে আমি মোবাইল নিয়ে ভিডিও করা শুরু করি। তৎক্ষণাৎ অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের আফসানা পারভীন তিনা আমার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। আমি মোবাইল কেড়ে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে একই বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের নাহিদ, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, সাব্বির, রিয়াজ মোর্শেদ, সৌরভ সোহাগ, পান্না ও একই বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের অজিল, সাইফুল, মশিউর রহমান ও হৃদয়সহ আরও ৮/১০ জন শিক্ষার্থী আমাকে ঘিরে ধরে চর, থাপ্পর, ঘুষি মারতে থাকে। পরে সাংবাদিক নূর ই আলম এসে মারধরের ভিডিও করলে তাকেও ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী মারধর করে। এসময় সমন্বয়কসহ অন্যান্য সাংবাদিক উদ্ধার করতে আসলে ফের মারধর করে। এছাড়া সাংবাদিক রবিউল ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর তাকে তলপেটে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। ওরা আমার ফোন কেড়ে নিয়েছে কিন্তু এখনো ফেরত দেয় নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, ‘আমি হট্টগোলের আওয়াজ শুনে মাঠের দিকে এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি কয়েকজন মিলে একজন সাংবাদিককে মারধর করছে। তার পাশে আরেক সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে তাকেও ভিডিও বন্ধ করতে বলা হয়। ভিডিও বন্ধ না করায় তাকে এসে লাথি মারে।’

ভুক্তভোগী নূর ই আলম বলেন, অর্থনীতি বিভাগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হলে সাংবাদিক আরিফ তথ্য সংগ্রহের জন্য মোবাইলে ভিডিও করতে গেলে একজন মোবাইল কেড়ে নেয় ও তাকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘিরে কিল, ঘুষি মারে। তৎক্ষনাৎ আমি মোবাইল দিয়ে ভিডিও অন করে ঘটনাস্থলে গেলে আমাকেও মারধর করে। এসময় অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মিনহাজ ও একই ২০২২-২৩ বর্ষের অজিল, সাইফুল, মশিউর রহমান ও হৃদয়সহ ১০/১৫ জন আমাকে কিল, ঘুষি ও ঘাড়ে আঘাত করে। এসময় সমন্বয়ক সুইট ও রব্বানী ভাই হামলা থেকে উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক রবিউল জানান, আমি বিকাল ৫টার সময় অফিসে অবস্থান করছিলাম। সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহ উপর হামলার বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে গেলে দেখি আরিফ বিল্লাহকে তারা ঘিরে রেখেছে। ওই সময় ভিডিও ধারণের প্রস্তুতি নিতে থাকলে কয়েকজন এসে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার জন্য উদ্যত হয়। আমি বলেছিলাম ‘আমি সাংবাদিক এভাবে আপনারা চার্জ করতে পারেন না।’ তখন কয়েকজন ‘তার মোবাইল কেড়ে নে, ওরে ধর, ভিডিও থাকলে ডিলিট দে’ বলে চারদিক থেকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারে। বিশেষ করে অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের নাহিদ হাসান আমার তলপেটে লাথি মারলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। এসময় সমন্বয়ক সুইট, রব্বানী ভাইসহ কয়েকজন আমাকে উদ্ধার করে।

সাংবাদিক রবিউল আরও জানান, এর আগে গত ২০ এপ্রিল একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন নাহিদ হাসান।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিককে তলপেটে লাথি মারার বিষয়টি

অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো সাংবাদিককে মারিনি। বরং আমাকে কোনো এক সাংবাদিক বুকে আঘাত করছে। বুকের ব্যাথায় এখন কথা বলতে পারছি না।'

আরেক অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আফসানা পারভীন তিনাকে একাধিকবার কল দিলেও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ইবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুনজুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়া ও মারধর কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় এমন ঘটনা লজ্জাজনক। এটি গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত কাজে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ফৌজদারি অপরাধও। আমরা প্রশাসনের কাছে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ ও ক্যাম্পাসে মুক্ত গণমাধ্যম চর্চার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসবো। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে আন্তঃসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ভিডিও করতে গেলে

এক সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে দফায় দফায় তিন সাংবাদিককে মারধর করেছে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফোন হস্তান্তর করেনি বলে জানা গেছে।

আমার বাঙলা/এফএইচ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

আবারও জোড়া গোলে নতুন উচ্চতায় মেসি

যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) লিওনেল মেসির নৈপুন্যে চলছেই। টুর্নামেন...

১৬টি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার পর্যালোচনা চলছে, নেয়া হবে দলগুলোর মতামত

১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০১২ সালে শি...

লাল চাঁদ হত্যার ঘটনা তদন্তে বিচারিক কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট

রাজধানীর মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্...

আইনশৃঙ্খলা চ্যালেঞ্জিং হলেও নির্বাচন সম্ভব : সিইসি

নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে সন্দেহ, সংশয় তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন ঠিক...

ভারতে পালাতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আটক

সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালাতে গিয়ে এক কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ...

লক্ষ্মীপুরে সওজ কর্মকর্তাদের জাগাতে প্রতীকী জানাযা

লক্ষ্মীপুরে খানাখন্দভরা সড়কগুলো মেরামতের উদ্যােগ না নেওয়া এবং সড়ক ও জনপদের ঘু...

অপু বিশ্বাস কেন আদালতে বোরকা পরে গেলেন

হত্যাচেষ্টার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ঢাকাই চিত্রনায়িকা অপু...

সাকিব এক দিন ভালো খেললেন, পরের দুই দিন উধাও

বল হাতে উইকেট না পেলেও আজ সকালে গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে নিয়ন্ত্রি...

৩টি অবৈধ চুনা কারখানা গুঁড়িয়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কর্...

আমের ক্যারেটে মিলল কোটি টাকার ইয়াবা

বাগেরহাটে ২০ হাজার ৩শ পিস ইয়াবাসহ কালাম হোসেন (২৫) নামে একজনকে আটক করেছে জেলা...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা