মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে আরবি ভাষা শিক্ষাকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে এক জাতীয় সেমিনারে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তাফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত হয় ‘রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, নৈতিক ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে শিক্ষার সর্বোত্তম ব্যবহার এবং আরবি ভাষা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক সেমিনার।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইইআর) ও বাংলাদেশ কুরআন প্রচার ফাউন্ডেশন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কুরআন প্রচার ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার তামজিদুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হাসান এম সাদেক, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, বোয়েসেল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া।
সেমিনারের উদ্বোধন করেন আইআইইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের শ্রমবাজারের জন্য সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় অঞ্চল। কারিগরি দক্ষতার পাশাপাশি আরবি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করলে এ বাজারে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। সরকারের উদ্যোগে আরবি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হলে পাঁচ বছরের মধ্যেই রেমিট্যান্স প্রবাহ দ্বিগুণ হতে পারে বলেও বক্তারা আশা প্রকাশ করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক ইকোনমিক মিনিস্টার ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতে ভিন্ন ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে অবহেলা করেছি। অথচ ইংরেজির পাশাপাশি আরবি ভাষার চর্চা আমাদের অর্থনীতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং জাতীয় স্বার্থে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখন সময় এসেছে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত আরবি ভাষা ও ইসলামী নৈতিক শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার।’
প্রধান আলোচক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘আরবি ভাষা শুধু ধর্মীয় নয়, পেশাগত ও অর্থনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন পোশাক শিল্পে বিদেশি বায়ারদের সঙ্গে ইংরেজিতে যোগাযোগের প্রয়োজন হয়, তেমনি মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে আরবি ভাষার দক্ষতা আমাদের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখবে। তাই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আরবি ভাষাকে বাধ্যতামূলকভাবে চালু করা সময়ের দাবি।’
আমারবাঙলা/এফএইচ