চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের অবস্থিত বাইতুশ শরফ আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা। ৫৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার খোঁজে তদন্ত চালাচ্ছে উপজেলা উপজেলা প্রশাসন। মূলত, মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মনোনয়ন নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জেরে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতার সন্ধানে এ তদন্ত কার্যক্রম চলছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ মে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্টার বরাবরে এস এম ইব্রাহিম নামে এক ব্যক্তি নিজেকে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে লিখিত একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি মাদ্রাসার এডহক কমিটি গঠনে মাদ্রাসা সুপার কর্তৃক মানানীত সভাপতির নামের তালিকা বাতিল ও তাকে সভাপতি মনোনয়ন দেওয়ার আবেদন করেন। অভিযোগপত্রে তিনি প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতাকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন ও প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ পারিবারিকভাবে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলেন।
অভিযোগকারী ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটিকে নিজস্ব স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে একটি প্রভাবশালী মহল। ২০১৫ সালের ভোটার তালিকা থেকে কৌশলে আমার নাম বাদ দিয়ে শাহ আলম চৌধুরী ও মোরশেদুল আলমকে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ’
ইব্রাহিম জানান, ১৯৮৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তার বাবা মাদ্রাসার জন্য ২৩ শতাংশ জমি দান করেন। ১৯৮৭ সালের ৬ জুন ৯ সদস্যের অর্গানাইজিং কমিটিতে তিনি সহসভাপতি ও একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে স্বীকৃতি পান।
অভিযোগের বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ফরিদুল আলম বলেন, ‘সবগুলোই মিথ্যা। অভিযোগগুলোর কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। মাদ্রাসা সুপারের দায়িত্বকালীন সময়ে ইব্রাহীম অর্থ আত্মসাৎ ও তৎকালীন ইউএনও হাবীবুল্লাহ মজুমদার সাহেবের স্বাক্ষর জাল করে। এর জেরে ১৯৯৬ সালে তিনি বরখাস্ত হন। এ ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে ইব্রাহিম ও তার ছোট ভাই ইদ্রিচ মামলা-হামলা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আসছে।’
এদিকে, গত ১৫ জুলাই মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্টার বিষয়টি সরেজমিন তদন্তপূর্বক মতামতের জন্য হাটহাজারীর ইউএনওকে অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে ইউএনও বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও তদন্তকারী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের লিখিত বক্তব্য নিয়েছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’
আমারবাঙলা/জিজি