রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে দিনমজুর শাহীন শেখ হত্যার প্রতিবাদ ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রবিবার (১৮ মে) বিকেলে স্থানীয় জনতা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। তবে এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষে ঘটনার মোড় নেয় উত্তেজনায়, যেখানে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় আহত হন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাব্বির হোসেন।
রবিবার বিকেল ৪টার দিকে ‘বসন্তপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে রাজাপুর এলাকার প্রধান সড়কের পাশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিহত শাহীনের পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা মানববন্ধনে বক্তারা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, রাজাপুর গ্রামের সাম বিশ্বাস, মুক্তার বিশ্বাস, রাফিজুল বিশ্বাস গং এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, অথচ এখনো তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি অভিযুক্ত সাম বিশ্বাসের বাড়ির সামনে গেলে সেখানে উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (সাব-ইন্সপেক্টর) সাব্বির হোসেন, যিনি সাদা পোশাকে তার এক সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তদন্ত করতে এসেছিলেন। একপর্যায়ে তার সঙ্গে বাদীপক্ষের লোকজনের কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
এ সময় অনেকে মামলার এজাহার, অভিযুক্তদের নাম, তদন্তের গতি ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। হঠাৎ করেই বিক্ষুব্ধ জনতা এসআই সাব্বির হোসেনের ওপর হামলা চালায় এবং মারধর করে তার মাথায় আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “মামলার তদন্তে নিয়োজিত এসআই সাব্বির হোসেন সেখানে তদন্তের কাজে গিয়ে ছিলেন। মিছিলকারীরা সাম বিশ্বাসের বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা তার ওপর হামলা চালায়।”
আহত এসআই সাব্বির সাংবাদিকদের জানান, “আমি মামলার তদন্তে গিয়েছিলাম। সাম বিশ্বাসের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মিছিলকারীরা বাড়ি ভাঙচুর করতে চাইলে আমি তাদের বাধা দিই। তখনই আমাকে মারধর করে আহত করা হয়।”
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে শুক্রবার রাতে শাহীন শেখকে সাম বিশ্বাসের বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ওই রাতেই নিহতের মামা কালাম মোল্লা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে নিহতের বাবা জিন্নাহ শেখ অভিযোগ করেছেন, তাকে মামলার বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি, যা নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে মামলার স্বচ্ছতা নিয়ে।
এদিকে, পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় জনগণ দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত নজরদারির ব্যবস্থা নিয়েছে।
আমারবাঙলা/ইউকে
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            