রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম (৯৩) আর বেঁচে নাই। মঙ্গলবার(১৭ জুন) ভোর ৫ টার দিকে বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের বড়মাইপাড়া গ্রামে মারা যান সখিনা বিবি। তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন হিলচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল হক নাহিদ।
সখিনা বেগম কিশোরগঞ্জ হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সোনাফর মিয়া এবং মায়ের নাম দু:খী বিবি। সখিনা বিবি নি:সন্তান ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের আগেই মারা যান স্বামী কিতাব আলী। নিকলীতে সখিনা বেগমকে দেখভাল করার কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর উপজেলার হিল চিয়ার বড় মাই পাড়া গ্রামে ভাগ্নি ফাইরুন্নেছা আক্তারের কাছে থাকতেন। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে বার্ধক্য জনিত কারনে মৃত্যু বরণ করেন। তিনি খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহানা মজুমদার জানায়, মঙ্গলবার আসর নামাজ পর গুরুই ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাযা শেষে সখিনা বেগমের গ্রামে শাহী মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সখিনা বেগম নেমে পড়েন সশস্ত্র যুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে সখিনা বেগমের ভাগিনা মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় সখিনা বেগম গুরুই এলাকার বসু বাহিনীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্পে রাধুনির কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে রাজাকারদের গতিবিধির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। এক পর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে কৌশলে সেখান থেকে আত্মগোপন করেন। আসার সময় সেখান থেকে একটি দা নিয়ে আসেন। পরে সে দা দিয়েই নিকলীর পাঁচ রাজাকারদের কুপিয়ে মারেন। সখিনা বেগমের সেই দা ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
আমারবাঙলা/ইউকে