মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নে অবস্থিত চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন। যোগাযোগের একমাত্র পথ কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর বাজারের ভেতর দিয়ে হওয়ায় প্রতিদিনই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ী ও পরিবহন চালকরা। মূল সমস্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো বিষয় হলো– বিপজ্জনক বাঁক। শমশেরনগর বাজার থেকে চাতলাপুর পর্যন্ত সড়কটির একাধিক স্থানে রয়েছে এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, যেখানে প্রতিদিন পণ্যবাহী গাড়িগুলো চলতে হচ্ছে চরম সতর্কতার সঙ্গে।
শুধু বাঁক নয়, শমশেরনগর বাজারের সরু রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে নিয়মিত যানজট লেগে থাকে। ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতি, রাস্তার পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ও বাজারকেন্দ্রিক ভিড়, সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি, বাজারের পাশ দিয়ে চা বাগানের ভেতর দিয়ে যাওয়া বিকল্প এক কিলোমিটার বাইপাস সড়কটি পাকা করলে এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান সম্ভব। এই সড়কটি ব্যবহার করলে বাজার এলাকার চাপ এড়িয়ে পণ্যবাহী গাড়িগুলো দ্রুত ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের পণ্যবাহি গাড়ি গুলো শ্রীমঙ্গল- ভানুগাছ সড়ক হয়ে শমশেরনগর বাজারের ভেতর দিয়ে চাতলাপুর সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এই সড়কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো শমশেরনগর বাজার। এখানে কয়েকটি উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের মানুষ প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা-বেচা করেন। এই বাজারে শমশেরনগর-ভানুগাছ সড়ক ও শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়কের জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠছে। এতে সড়ক সরু হওয়ায় চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের পণ্যবাহী গাড়ি বাজারের ভেতর প্রবেশ করলে দীর্ঘ যানযট সৃষ্টি হয়। এতে করে বাজারে আগত ক্রেতা-বিক্রেতা, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বাজারের চৌমুহনীতে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় যানজট লেগেই থাকে।
বাজারের ভানুগাছ সড়কের গাজী সালাউদ্দিন ইসলামী একাডেমির পাশে চা বাগান হয়ে এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সড়ক চাতলাপুর সড়কে সংযুক্ত হয়েছে। এই সড়ক পাকাকরণ করলে বাজার ও যানজট এড়িয়ে পণ্যবাহী গাড়িগুলো স্টেশনে পৌঁছাতে পারবে। এছাড়া চাতলাপুর সড়কের কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়ন ও কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বেশ কয়েকটি বিপদজনক বাঁক রয়েছে। এসব বাঁক পেরিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে অনেক সময় ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় বালু বুঝাই ট্রাক চলাচলের কারনে সড়কের তুলনায় যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। তখন সড়কজুড়ে বাজার এলকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সড়কের প্রস্থ বড়করা হলেও চাতলাপুর সড়কটি তুলনামূলক এখনও অনেক সরু রয়ে গেছে।
কমলগঞ্জ এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাকিব জানিয়েছেন, বাইপাস সড়ক পাকাকরণ প্রক্রিয়াধীন। তবে বরাদ্দ না থাকায় এখনো কাজ শুরু হয়নি।
মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার হামিদ বলেন, ‘বাঁকগুলো কাটা প্রয়োজন। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি উন্নয়ন সভায় প্রস্তাব করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।
চাতলাপুর স্থলবন্দর শুধু একটি শুল্ক স্টেশন নয়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সম্ভাবনাময় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ছাড়া এর পূর্ণ সম্ভাবনা কখনোই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
আমারবাঙলা/ইউকে