ফেনীর সদরের বিরিঞ্চিতে দুই শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার মামলার মূল আসামি কামাল হোসেন জনিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার প্রায় এক বছর পর গত ৪ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট থানাধীন মাদারবাড়ি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। জনি ‘কাসিম’ ছদ্মনামে দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় পলাতক ছিলেন।
ডিবি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে জনি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, ঘটনার দিন (৫ অক্টোবর ২০২৩) রাত আনুমানিক একটার দিকে তিনিসহ মোট চারজন ভুক্তভোগীর বসতঘরে সরাসরি আগুন লাগিয়ে দেন। সম্পত্তির বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। ঘটনার তিন থেকে চার দিন আগে একটি বাগানে বসে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই জনি আত্মগোপনে চলে যান। তিনি প্রথমে ফেনীর ছাগলনাইয়া এবং পরে ‘কাসিম’ নামে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি নিজের নামে কোনো মোবাইল ফোন বা সিমকার্ড ব্যবহার করতেন না। টানা তিন দিনের অভিযানের পর ডিবির একটি দল মাদারবাড়ি এলাকা থেকে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।
জনির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার মাস্টারমাইন্ড ও ঘটনায় জড়িত অন্যদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম আপাতত প্রকাশ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর রাতে ফেনী সদরের বিরিঞ্চি এলাকায় সহিদুল ইসলামের বসতঘরে অগ্নিসংযোগে তার দুই শিশু সন্তান—মাহিদুল ইসলাম শাহাদাত (১৩) ও তানজিদুল ইসলাম গোলাপ (৬)—আগুনে পুড়ে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহত শিশুদের পিতা সহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এর প্রেক্ষিতে ফেনী মডেল থানায় মামলা নং ১৫ (তারিখ: ০৫/১০/২০২৩) রুজু হয়। মামলাটি দায়ের করা হয় দণ্ডবিধির ৪৩৬/৩০২/৩২৪/৩০৭/৪২৭/৩৪ ধারায়। প্রথমে ফেনী মডেল থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করলেও পরবর্তীতে এর গুরুত্ব বিবেচনায় তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়।
আমারবাঙলা/এফএইচ