দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের স্ত্রী কিম কিয়ন হি–কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং ঘুষ গ্রহণসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সিউলের আদালতে চার ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে কিম কিয়ন হি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে আদালত আশঙ্কা প্রকাশ করে যে, তিনি প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। এই কারণে তাঁকে কারাগারে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্টদের বিচার ও কারাদণ্ডের ঘটনা নতুন নয়। তবে দেশটিতে এবারই প্রথম কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী দুজনকেই কারাগারে যেতে হলো।
গত বছর প্রেসিডেন্ট থাকাকালে সামরিক আইন জারি করে ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন ইউন। তাঁর এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট সদস্যরা সোচ্চার হলে অল্প সময় পরই আদেশ প্রত্যাহার করে নেন তিনি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তিনি ক্ষমতাচ্যুতও হন। সামরিক আইন জারির ঘটনায় বিচারের মুখোমুখি করতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কৌঁসুলিরা বলছেন, ইউনের স্ত্রী ৫২ বছর বয়সী কিম কিয়ন শেয়ারবাজারে কারসাজি করে প্রায় ৮০ কোটি ওন (প্রায় ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪০ ডলার) লাভ করেছেন। বিএমডব্লিউর ডয়েচ মোটরস নামের এক পরিবেশকের শেয়ারে এমন কারসাজির ঘটনা ঘটেছে।
কৌঁসুলিরা বলছেন, ইউনের স্ত্রী ৫২ বছর বয়সী কিম কিয়ন হি শেয়ারবাজারে কারসাজি করে প্রায় ৮০ কোটি ওন (প্রায় ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪০ ডলার) লাভ করেছেন। বিএমডব্লিউর ডয়েচ মোটরস নামের এক পরিবেশকের শেয়ারে এমন কারসাজির ঘটনা ঘটেছে। ওই শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো-কমানোর মতো কারসাজিতে তিনি জড়িত ছিলেন।
যেসব বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে, তার সব কটিই ঘটেছে কিমের স্বামী ইউন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর পুরো মেয়াদকালেই অভিযোগগুলোর একটি প্রভাব ছিল।
কিমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি ব্যবসায়িক সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে বিতর্কিত ইউনিফিকেশন চার্চ থেকে দুটি শ্যানেল ব্যাগ ও একটি হীরার নেকলেস ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন। এর বাইরে কিমের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের উপনির্বাচন ও গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে অবৈধ হস্তক্ষেপের অভিযোগও আনা হয়েছে।
ইউন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বিরোধীদের উত্থাপিত তিনটি বিলে ভেটো দিয়েছিলেন। বিলগুলোতে কিমের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবারের শুনানিতে কিম কালো স্যুট ও স্কার্ট পরে উপস্থিত ছিলেন।
ইউন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বিরোধীদের উত্থাপিত তিনটি বিলে ভেটো দিয়েছিলেন। বিলগুলোতে কিমের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
ইউন সর্বশেষ বিলে ভেটো দিয়েছেন গত বছরের নভেম্বর মাসে, সামরিক আইন জারির এক সপ্তাহ আগে।
চলতি বছরের জুনে ইউনের প্রতিদ্বন্দ্বী লি জে মিউং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
আমারবাঙলা/এফএইচ