দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কঠোর অবস্থানে গেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। গোষ্ঠীটি ঘোষণা দিয়েছে যে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই এলাকায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা শূন্যতা সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না। বরং জননিরাপত্তা এবং সাধারণ মানুষের সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ন্ত্রণে হামাস সক্রিয় অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযান চলাকালে হামাসের কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করা এবং বিদেশি শক্তি, বিশেষ করে ইসরায়েলকে সহায়তার অভিযোগে ৩৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে হামাস। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে হামাস স্পষ্ট বার্তা দিল যে গাজায় তাদের শাসনকে চ্যালেঞ্জ জানানো বা বিদেশি শক্তির সহযোগিতা বরদাস্ত করা হবে না।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। যুদ্ধবিরতির পর হামাস এখন ধীরে ধীরে তাদের প্রশাসন ও নিরাপত্তা কাঠামো পুনর্গঠন করছে। গাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কিছু বিভ্রান্তি ও সহিংসতা দেখা দেওয়ায় হামাস জননিরাপত্তা বজায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
রাফাহ অঞ্চলে হামাসবিরোধী এক নেতার বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। গোষ্ঠীটির দাবি, এসব ব্যক্তি ইসরাইলের হয়ে কাজ করছে এবং গাজায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছিল। হামাস বলছে, যুদ্ধবিরতির সুযোগে তারা গাজার অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চায়।
হামাস সরকারের মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেন, ‘আমরা গাজায় নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণ যেন নিরাপদে থাকতে পারে- সেই দায়িত্ব হামাস সরকারের।’
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যদি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, হামাস তার অস্ত্র সেই রাষ্ট্রের হাতে সমর্পণ করতে প্রস্তুত। তবে গাজার শাসন কাঠামো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ফিলিস্তিনিদের মধ্যেই, কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়া।
বিশ্লেষকদের মতে, হামাসের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো গাজায় পুনরায় প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা, যাতে আগামীর যেকোনো চুক্তি বা রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়ায় গাজার জনগণের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে।
আমারবাঙলা/এফএইচ