স্মৃতির পাতা উল্টে পচেফস্টুমের সেনওয়েস পার্কে একবার ঘুরে আসা যাক। ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ যখন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ উল্লাসে মত্ত তখন হতাশায় মুষড়ে পড়েন যশস্বী জয়সওয়ালসহ ভারতীয় ক্রিকেটাররা। চার বছর পর দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে যোজন যোজন ফারাক।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান জয়, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয়রা এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছরেরও বেশি সময় পার করেছেন। জয়সওয়ালের ভারতের জার্সিতে পথচলা শুরু ২০২৩ সালে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যেখানে নিজেকে মেলে ধরার মঞ্চ, সেখানেই ব্যর্থ বাংলাদেশের জয়-তানজিদ তামিমরা।
এখনো তাদের শিক্ষাপর্ব চলছেই। অথচ তাদের সমসাময়িক জয়সওয়াল রীতিমতো উড়ছেন। পাল্লা দিয়ে একের পর এক রেকর্ড গড়ে চলেছেন তিনি। জয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি থাকলেও তানজিদ তামিম, হৃদয়ের নেই কোনো তিন অঙ্কের ইনিংস। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে টেস্টে জয়সওয়ালের অভিষেকটা হয়েছে মনে রাখার মতো।
ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে প্রথম ইনিংসেই করেন ১৭১ রান। ২২ বছর বয়সী এই ভারতীয় ব্যাটার এখন পর্যন্ত ১৫ টেস্ট খেলে করেছেন ১৫২৮ রান। ৪ সেঞ্চুরির তিনটিই করেছেন ২০২৪ সালে। তাতে ভাগ বসিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার-রবি শাস্ত্রীর মতো কিংবদন্তিদের রেকর্ডে। বয়স ২৩ পূর্ণ হওয়ার আগে এক বছরে টেস্টে তিনটি করে সেঞ্চুরির কীর্তি রয়েছে শচীন, শাস্ত্রী ও জয়সওয়ালের। আজ জয়সওয়ালের বয়স ২২ বছর ৩৩২ দিন।
ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে কখন কীভাবে খেলতে হবে, সেটা জয়সওয়ালের ভালোই জানা। এ বছর তিনি টেস্টে মেরেছেন ৩৫ ছক্কা। যা ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে এক বছরে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। ২০১৪ সালে কিউই এই ব্যাটার টেস্টে মেরেছিলেন ৩৩ ছক্কা। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত জয়সওয়াল পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান প্রথম টেস্টে ব্যাটিং করেছেন একটু ভিন্ন ধারায়। প্রথম ইনিংসে ডাক মারার পর তৃতীয় দিনে জয়সওয়াল সেঞ্চুরি করেছেন ২০৫ বলে। ভারতীয় বাঁহাতি ব্যাটার তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন জশ হ্যাজলউডকে ছক্কা মেরে। সেঞ্চুরির পর হেলমেট আর ব্যাট আকাশের দিকে উঁচিয়ে করেছেন উদযাপন।
টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা জয়সওয়াল আউট হয়েছেন ১৬১ রান করে। ২৯৭ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১৫ চার ও ৩ ছক্কা। জয়সওয়াল যখন পার্থে খেলছেন, তাঁরই সমসাময়িক ক্রিকেটার জয় ব্যস্ত অ্যান্টিগায়। জয়-জয়সওয়াল দুজনেই খেলছেন ওপেনার হিসেবে। তবে জয় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে। ৩৩ বল খেললেও করেছেন মাত্র ৫ রান। টেস্টে সবশেষ ১২ ইনিংসে কোনো ফিফটি নেই ২৪ বছর বয়সী এই বাংলাদেশি ব্যাটারের। একমাত্র সেঞ্চুরিটা ২০২২ সালের মার্চ-এপ্রিলে করেছিলেন ডারবানে।
সেবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রান করলেও সেই টেস্ট বাংলাদেশ হেরেছিল ২২০ রানে। জয়ের টেস্ট অভিষেক হলেও তানজিদ তামিম, হৃদয়ের ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে কোনো ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হয়নি। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটেও যে হৃদয়-তানজিদ তামিম নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না। টানা দুইটি আইসিসির ইভেন্টে (২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) ভরাডুবি হয়েছে এই দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটারের। জয়সওয়াল উড়তে থাকলেও তানজিদ তামিম-হৃদয়রা ধুঁকছেন নিয়মিত। উইকেটে থিতু হয়ে হৃদয়রা যেমন ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ, তেমনি ভুলের পুনরাবৃত্তি করে উইকেট বিলিয়ে আসছেন নিয়মিত।
.
আমার বাঙলা/এসএইচ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            