জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, "বিএনপির জন্ম হয়েছিল 'হ্যাঁ' ভোটের মধ্য দিয়ে; বিএনপি যদি না ভোটে স্টিক থাকে, বিএনপির মৃত্যু হবে 'না' ভোটের মধ্য দিয়ে।"
বিএনপির জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, কাবিননামায় সাইন করেছে বিএনপি; তারা জুলাই সনদে 'হ্যাঁ' বলেছে, তাই তাদের 'না' বলার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, "বিএনপির 'না' শব্দ বলার কোনো ওয়ে নাই, তারা 'হ্যাঁ' অলরেডি বলে দিয়েছে। তারা বিবাহে রাজি হয়েছে, কাবিননামায় সাইনও করেছে। এখন তাদের 'না' বলার কোনো অপশন নাই। তাদের এটা আগেই ভেবেচিন্তে করা উচিত ছিল।"
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নাগরিক ঐক্যের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
পাটওয়ারী বলেন, "কমিশন থেকে সুপারিশ এসেছে, আমরা সেখানে দাবি করেছি, প্রস্তাবনা যে এক যেটা রয়েছে, সেটার পথেই সরকারকে হাঁটতে হবে। এছাড়া সরকারের সামনে বিকল্প কোনো পদ্ধতি থাকা উচিত না। কিন্তু পদ্ধতি বা প্রকল্প প্রস্তাব যেটা এক নাম্বার রয়েছে, সেখানেও আবারো কিছু বিপত্তি বাধিয়েছে কনসেনসাস কমিশন (ঐকমত্য কমিশন)। সেখানে তারা কিছু শব্দ যোগ করেছে, 'বিবেচনা করিবে', 'হবে', 'সম্ভাবনা', অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ তারা যোগ করেছে। সেখানে আমরা এই শব্দগুলোর সুস্পষ্টতা সরকারের কাছে দাবি করছি। কারণ 'বিবেচনা করিবে', 'নাও করতে পারে', এই ধরনের অস্পষ্টতার মধ্য দিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে ঠেলে দিতে পারবো না।"
তিনি আরও বলেন, "গণভোট কি আগে হবে, নাকি পরে হবে, আমরা মনে করি এটা জামায়াতে ইসলাম এবং বিএনপির মধ্যে একটা কুতর্ক। এই কুতর্কের মধ্যে আমরা জড়াবো না। বরংচ দুই দলেরই উচিত ইলেকশন কমিশনকে শক্তিশালী করা। কারণ আমরা বারবার বলছি, এই ইলেকশন কমিশনের যে কমিশনারগণ রয়েছেন, কয়েকটি দল মিলিটারি থেকে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। ফলত এস্টাবলিশমেন্টের অংশ যখন এই ধরনের ভাগ-বাটোয়ারা হয়, এটার প্রত্যক্ষ প্রভাব কিন্তু হলো ইলেকশনের মধ্যেও পড়বে।"
তিনি বলেন, "আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে জামায়াত এবং বিএনপির এই যে গণভোট আগে-পরে, এই যে কুতর্ক আছে, আমরা সেই কুতর্কে জড়াবো না। কারণ আমাদের সামনে অনেকগুলো কাজ রয়েছে, আমরা সেই কাজগুলোতে ফোকাসড হয়ে আছি।"
পাটওয়ারী বলেন, "বিএনপির জন্ম হয়েছিল 'হ্যাঁ' ভোটের মধ্য দিয়ে; বিএনপি যদি না ভোটে স্টিক থাকে, বিএনপির মৃত্যু হবে 'না' ভোটের মধ্য দিয়ে। বিএনপি এই কনসেনসাস কমিশনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসার যে পাঁয়তারা চালাচ্ছিল, বাংলাদেশের জনগণ সেই জায়গাটা ঠেকিয়ে দিয়েছে।"
তিনি বলেন, "তাদের (বিএনপি) উপর নতুন করে আরেকটা বর আবির্ভূত হয়েছে, সেটা হলো জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামীলীগ প্রশ্নে আমরা কোনো ছাড় দেব না। কারণ তারা আমাদের পিঠের চামড়া তুলে নিয়েছিল। ওবায়দুল কাদের বলেছিল ৫ লাখ লোক মারা যাবে, আমরা একটা লোকের গায়েও হাত দেই নাই। আমরা এখনো ধৈর্য ধারণ করতেছি। কিন্তু যদি বাধা দিতে আসেন, সেখানে কিন্তু চরম বাধা আমরা গড়ে তুলব।"
তিনি আরও বলেন, "এবং আপনারা যারা রাজনীতি করছেন, রাজনৈতিক মহলে আছেন, যে ছাত্ররা ঘুমিয়ে গিয়েছে, পড়া টেবিলে চলে গিয়েছে, আমরা পড়তেও জানি, ঘুমাইতেও জানি, রাজপথে বাঁশ নিয়ে নামতেও জানি। সেজন্য বিএনপিকে আহ্বান জানাব, আওয়ামীলীগ এবং জাতীয় পার্টিকে সংসদে নেওয়ার ভুলও কল্পনা করিয়েন না।"
নাসীরুদ্দীন বলেন, "আর ডক্টর ইউনুসের কাছে আহ্বান জানাব, দ্রুত গতিতে এই আদেশ জারি করেন, জনসম্মুখে উপস্থিত হোন। আমাদের হাতে সময় বেশি নেই। দেশ অন্য পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইলেকশন দেন। আপনি যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইলেকশন না দিতে পারেন, তাহলে পরবর্তীতে যদি কোনো গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হয়, সে দায় আপনার কাঁধে বর্তাবে।"
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে পাটওয়ারী বলেন, "যারা এক বছর আরাম-কেদারায় বসে বসে ফ্যামিলি মেম্বারদের নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা লোপাট করেছেন, এখন সার্ভিস দিতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "এজন্য আজকে মান্না ভাই একটা প্রোগ্রাম করেছেন। এই প্রোগ্রামের দিয়ে এখানে নয়টি দল নিজেদের মধ্যে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এ এসেছে, প্রিন্সিপাল বেসড। এই আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এখানে অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। কিন্তু আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা সিটের কাছে বিক্রি হবেন না কেউ। একটা সিট না পাইলে কি হবে আপনার? মন্ত্রী না হলে কি হবে? মরার পরে যদি আপনার কবরে কেউ থুথু দেয়, ওই একটি সিট দিয়ে আপনি কি করবেন?"
পাটওয়ারী বলেন, "এজন্য আপনাদের কাছে আমাদের অনেক আশা রয়েছে। এ আশা আপনারা নষ্ট করবেন না। আমার প্রতি আপনাদের কষ্ট হবে। আমার প্রতি আপনাদের হতাশা আসবে। ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলি নাই। আপনাদের ভালোর জন্যই বলেছি। দোয়া রাখবেন, আশা করি ভবিষ্যতে ইনশাল্লাহ আবার আমাদের রাজপথে দেখা হবে। রাজপথে লড়াই নামতেছে। সে লড়াইয়ে ইনশাল্লাহ দেখা হবে সবার সাথে।"
আমারবাঙলা/এফএইচ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            