চট্টগ্রামের রাউজানে নিখোঁজের প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর এক নৈশপ্রহরীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম শফিউল আলম চৌধুরী ওরফে শফি (৭০)। তিনি রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করতেন।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জঙ্গল রাউজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কের পাশে খোলা একটি স্থান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। স্থানটি পেছন দিক থেকে সামীনা প্রচীর দিয়ে ঘেরা ছিল।
নিহত শফি ওই ওয়ার্ডের ওয়াহেদের খীল গ্রামের গুরা মিয়া চৌধুরী বাড়ির বাসিন্দা এবং প্রয়াত আমির আলী চৌধুরীর ছেলে। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ চার সন্তানের জনক। প্রায় এক বছর ধরে তিনি চারাবটতল বাজারে নৈশপ্রহরীর দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী দিলু আরা বেগম জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাতের খাবারের উদ্দেশ্যে বাজারে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হন শফি। এরপর রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার রাতে রাউজান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
তিনি আরও জানান, শনিবার সকালে সুজন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে খবর দিলে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে তারা মরদেহটি শফির বলে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের ছেলে ইসহাক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে এবং তাকে নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিহতের শ্যালক মো. জসিম উদ্দিন জানান, ঘটনার কয়েক দিন আগে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি সেজে আসা লোকের সঙ্গে শফির ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। তিনি ওই ব্যক্তিকে আঘাতও করেছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) বেলায়েত হোসেন বলেন, একটি মরদেহ পড়ে থাকার সংবাদ পেয়ে পুলিশ তা উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি হত্যাকাণ্ড কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
আমারবাঙলা/এনইউআ