গাজার পরিস্থিতি এখন স্পর্শকাতর সময়ে পৌঁছেছে। যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবে আশার কথা, পবিত্র রমজান মাসে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাবে ইসরায়েল সমর্থন দিয়েছে।
রবিবার (২ মার্চ) টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, প্রথম ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েল নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সাময়িক যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব দিয়েছেন।
উইটকফের প্রস্তাব অনুযায়ী, রমজান এবং ইহুদিদের বসন্তকালীন উৎসবের (পাসওভার নামে পরিচিত) সময় একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চুক্তি প্রতিষ্ঠা করা।
এই প্রস্তাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি আরো এক মাস বাড়ানোর মাধ্যমে, সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রতিবেদনটির দাবি, হামাস এখনো এই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি এবং তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকলে যুদ্ধ পুনরায় শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। হামাস বারবার বলে এসেছে, তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায়।
গত শুক্রবার রাত থেকে মধ্যপ্রাচ্যে রমজান শুরু হয়েছে, ২৯ মার্চ পর্যন্ত চলবে। আর এ বছর ইহুদিদের বসন্তকালীন উৎসব শুরু হবে আগামী ১২ এপ্রিল, চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। এই সময়ে, ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনেই জীবিত এবং মৃত বন্দিদের অর্ধেক মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি সাপেক্ষে বাকি বন্দিরাও মুক্তি পাবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব সমর্থন করছি, এবং আমাদের লক্ষ্য হল হামাসের সঙ্গে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির চুক্তি করা। যদি হামাস তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে, আমরা অবিলম্বে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
তবে ইসরায়েল আরো সতর্ক করে দিয়েছে, যদি চুক্তি কার্যকর না হয়, তাহলে ১ মার্চের পর যেকোনো সময় যুদ্ধ পুনরায় শুরু করা হতে পারে।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস বারবার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়নি। যদিও চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা প্রথম ধাপের প্রথম ১৬ দিনের মধ্যে শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। আলোচনার জন্য প্রতিনিধিদল পাঠাতে বিলম্ব করে ইসরায়েল। শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল গত বৃহস্পতিবার মিসরের কায়রোয় নিজেদের প্রতিনিধিদল পাঠায়।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ইসরায়েলের একটি পক্ষ মনে করছে, হামাস এখনো সংকট সমাধানে প্রস্তুত নয়, যা যুদ্ধ ফের শুরু হওয়ার শঙ্কাকে উস্কে দিতে পারে।
অন্যদিকে হামাসের দাবি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ছাড়া গাজায় শান্তিস্থাপন সম্ভব হবে না। ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অগ্রহণযোগ্য।
এদিকে, শনিবার গাজা সীমান্তে ফিলাডেলফি করিডোর থেকে ইসরায়েলের বাহিনী প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা না হওয়ায় উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়। এলাকা নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইসরাইল কাটজ এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই আলোচনায় অংশ নেন, ইসরায়েলের আলোচক দলও এর মধ্যে উপস্থিত ছিল।
একদিকে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেখানো হচ্ছে, তবে অন্যদিকে, চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে আবারো যুদ্ধের চেহারা পরিবর্তন হতে পারে; যা পরিস্থিতি আরো জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে।
আমারবাঙলা/আরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            