চট্টগ্রাম বন্দরে বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। টার্মিনালটি নির্মাণের জন্য সহায়ক অবকাঠামো তৈরিতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়বে।
আজ রবিবার (২০ এপ্রিল) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৪ হাজার ৯০৯ কোটি টাকার বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অনুমোদনের জন্য উঠবে।
পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠেয় একনেক সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করবেন। বে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য সহায়ক এই প্রকল্পটি পাস হলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া অন্যতম বড় প্রকল্প হবে এটি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০৩১ সালের জুন মাস নাগাদ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্পটি উত্তর হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় হবে। এই প্রকল্পের আওতায় সাগরের ব্রেকওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল সুবিধা তৈরি করা হবে। এ ছাড়া রেল, সড়কসহ যাবতীয় অবকাঠামো ও পরিষেবা সুবিধাও নির্মাণ করা হবে।
এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক দেবে ১০ হাজার ২৭২ কোটি টাকা এবং সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন চার হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা।
তিনটি টার্মিনালের মধ্যে দুটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) ব্যবস্থায় নির্মিত হবে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে পিপিপি কর্তৃপক্ষ এবং এন্টারপ্রাইজ অব সিঙ্গাপুরের মধ্যে টার্মিনাল ১-এর জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছিল। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে টার্মিনাল ২ নির্মাণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে আরেকটি এমওইউ সই হয়েছিল।
এ ছাড়া একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের একটি এমওইউ সই হয়েছে গত বছরের মে মাসে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রস্তাবিত অবকাঠামো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কাজ শুরু না করলে পিপিপির আওতায় টার্মিনাল নির্মাণে আগ্রহী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আস্থা হারাবে। এই করণে প্রকল্পটিতে গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান সরকার।
এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক প্রাথমিকভাবে বিটিএমআইডিপির আওতায় ব্রেকওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল নির্মাণের জন্য ৬৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। এই প্রকল্পের জন্য মোট ৮৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণের প্রয়োজন হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। অতিরিক্ত ঋণও বিশ্বব্যাংক দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে সম্প্রতি এই প্রকল্পটি নিয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে।
প্রকল্প প্রস্তাব অনুসারে, প্রস্তাবিত বিটিএমআইডিপিতে ব্রেকওয়াটার নির্মাণে আট হাজার ২৬৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা, নেভিগেশন অ্যাকসেস চ্যানেল নির্মাণে এক হাজার ৯৭৯ দশমিক ৪৫ কোটি টাকা, এইডস টু নেভিগেশন স্থাপনে ৫৭ দশমিক ৭০ কোটি টাকা এবং কমন ফ্যাসিলিটিজ ও অভ্যন্তরীণ সংযোগের জন্য তিন হাজার ৪৩৪ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে।
সরকার ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে বে টার্মিনাল নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। একই বছরে জার্মানির হামবুর্গ পোর্ট কনসালট্যান্ট প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করে। এরপর ২০১৭ সালে পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও মাস্টারপ্ল্যান তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরে ২০২১ সালে কুনহুয়া নামক একটি কোরিয়ান কোম্পানিকে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়, যা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে এবং প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম এবং জাতীয় উন্নয়নকে সহায়তা করতে বে টার্মিনালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            