আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ইউক্রেন শুধুমাত্র খারকিভ অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত রুশ ভূখণ্ডে এই হামলা চালাতে পারবে।
শুক্রবার (৩১ মে) মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
অবশ্য পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালানো হলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য আমেরিকান সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন বলে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন। তবে এই অনুমতি শুধুমাত্র খারকিভ অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত রুশ ভূখণ্ডে হামলার জন্য।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসি নিউজকে বলেছেন, ইউক্রেন যেন ‘পাল্টা-হামলার উদ্দেশ্যে’ মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করতে সক্ষম হয় তা নিশ্চিত করার জন্য তার দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত যেখান থেকে ‘রুশ বাহিনী তাদের (ইউক্রেনকে) আঘাত করছে বা তাদের আঘাত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে’ সেখানে হামলা করতে পারবে ইউক্রেন।
বিবিসি বলছে, রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় নজিরবিহীন আক্রমণের পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়ান বাহিনী খারকিভ অঞ্চলে বেশ সাফল্য অর্জন করেছে এবং অগ্রসর হয়েছে।
শুক্রবার ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, খারকিভ শহরের উপকণ্ঠে একটি আবাসিক ভবনে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে তিনজন নিহত এবং আরও ১৬ জন আহত হয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসিকে আরও বলেছেন: ‘আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) বা রাশিয়ার অভ্যন্তরে দূরপাল্লার হামলা নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আমাদের নীতি পরিবর্তন হয়নি।’
এদিকে নতুন নীতিতে রাশিয়ার বিমানে আক্রমণ করা অন্তর্ভুক্ত আছে কিনা জানতে চাইলে একজন কর্মকর্তা বলেছেন: ‘আমরা তাদের (ইউক্রেন) কখনও বলিনি, তারা রাশিয়ার ভূখণ্ডে রাশিয়ান বিমানকে গুলি করতে পারবে না যেটি তাদেরকে আক্রমণ করতে আসছে।’
হোয়াইট হাউস এবং মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
অবশ্য এই ধরনের অনুমতি বা পদক্ষেপ চলমান সংঘর্ষের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এমন উদ্বেগ সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় নেতা সম্প্রতি এই ধরনের অস্ত্রের ব্যবহারে বিধিনিষেধ শিথিল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
কিন্তু ওয়াশিংটন সংঘাত আরও জোরালো হওয়ার ভয়ে এই ধরনের বিধিনিষেধগুলো শিথিল করতে বাধা দিয়ে থাকে। মূলত রাশিয়াকে মোকাবিলায় ইউক্রেনকে বেশিরভাগ অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রই সরবরাহ করে থাকে।
তবে বুধবার মলদোভা সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন রুশ ভূখণ্ডে হামলা না করার বিষয়ে মার্কিন নীতিতে এই পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন। সেদিন তিনি বলেন, ‘প্রতিটি পদক্ষেপে, আমরা প্রয়োজন অনুসারে মানিয়ে নিয়েছি এবং সামঞ্জস্য করেছি। এবং এভাবেই আমরা সামনে এগিয়ে যাবো।’
অবশ্য পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালানো হলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সম্প্রতি উজবেকিস্তান সফরকালে তিনি বলেন, ‘সংঘাতের এই ক্রমাগত বৃদ্ধি গুরুতর পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। ইউরোপে, বিশেষত ছোট দেশগুলোতে, তারা কী নিয়ে খেলছে সে সম্পর্কে তাদের সচেতন হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, এমন অনেক ইউরোপীয় দেশ রয়েছে যারা ‘আয়তনে ছোট’ এবং সেসব দেশের ‘ঘনবসতিপূর্ণ জনসংখ্যা’ রয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে আঘাত করার কথা বলার আগে এই বাস্তবতাটি তাদের মনে রাখা উচিত, এটি গুরুতর বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের বাহিনী হামলা চালালেও তার দায়ভার পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহকারীদের ওপরই বর্তাবে।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন পশ্চিমা সামরিক প্রশিক্ষকরা ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে ভাড়াটে হিসাবে গোপনে কাজ করছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সেনাদের ইউক্রেনে পাঠানোর কোনও পদক্ষেপ নিলে তা সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেবে এবং ইউরোপকে গুরুতর সংঘাতের দিকে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেটি হবে বৈশ্বিক সংঘাতের দিকেও আরেকটি পদক্ষেপ।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            