জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, “গণভোট নিয়ে তালবাহানা করবেন না।” তিনি বলেন, নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার কোনো যুক্তি নেই। আগে গণভোট অনুষ্ঠিত হলে তাতে আপত্তির কিছু নেই।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ফেনী শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত জামায়াতে ইসলামী ফেনী জেলা শাখার এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচন গণভোটের দিনে হবে— এ কথার কোনো ভিত্তি নেই। আপনি যদি গণভোটে রাজি থাকেন, তাহলে একই দিনে মানুষ দুটি ভোট দেবে কেন? আগে গণভোট হলে অসুবিধা কোথায়? এর মানে স্পষ্ট— ডালমে কুচ কালা হে।”
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এ মাসের মধ্যেই গণভোটের আয়োজন করুন। দেখা যাক, জনগণ কাদের পক্ষে রায় দেয়। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি। বিএনপি ছাড়া প্রায় সব দলই এ বিষয়ে একমত হয়েছে।”
জামায়াত নেতা আরও বলেন, “একটি দল ক্ষমতায় গেলে জুলাই সনদ ছুঁড়ে ফেলে দেবে। যারা নিজের দলের ভেতরে শৃঙ্খলা রাখতে পারে না, তারা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে কীভাবে? নির্বাচন না হলে দেশে আবার স্বৈরশাসন কায়েম হবে, দুর্নীতিবাজদের স্বর্গরাজ্য তৈরি হবে, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিতে দেশ ভরে যাবে— আমরা তা হতে দিতে পারি না।”
শহীদদের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শহীদদের স্বীকৃতি দিতে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি হয়েছে। আমরা এতে সাক্ষর দিয়েছি। এখন এর আইনি স্বীকৃতি দিতে বাধা কোথায়? কিন্তু একটি দল এর বিরোধিতা করছে।”
আগামী নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “এ নির্বাচন কেবল ক্ষমতা পরিবর্তনের নয়, এটি সামগ্রিক পরিবর্তনের নির্বাচন। আমরা পেছনে ফিরতে চাই না। ২০২৪ সালের আন্দোলনে যে তরুণেরা জীবন দিয়েছেন, তারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন— আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই।”
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যারা দেশে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে চান, তারা জামায়াতে ইসলামকে ভোট দিন। অতীতের সরকারগুলোর সময় আমরা যা দেখেছি, এবার জামায়াতে ইসলামকে সুযোগ দিয়ে দেখুন— তারা দেশ পরিচালনায় কী করতে পারে।”
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন ফেনী জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি আবদুল হান্নান। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন—ফেনী সদর আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁঞা, ফেনী-১ আসনের প্রার্থী এডভোকেট এসএম কামাল উদ্দীন, ফেনী-৩ আসনের প্রার্থী ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য একেএম শামছুদ্দিন, জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুর রহিম ও প্রচার সম্পাদক আনম আবদুর রহিম।
সভায় জেলা জামায়াত, ইসলামী ছাত্রশিবির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আমারবাঙলা/এফএইচ