চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুই দেশের জন্যই নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।
শনিবার থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত “কোরিয়ান মুভি অ্যান্ড কে-পপ ফেস্ট” অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ—এই তিন স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে ঢাকা ও সিউলে উভয় দেশের দূতাবাস এই সম্পর্ককে আরও গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য ও হিমায়িত সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি হচ্ছে। অপরদিকে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিকস, কেমিক্যাল ও স্টিলজাত পণ্য আমদানি করা হচ্ছে।
মেয়র আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশ। বিশেষ করে তৈরি পোশাক ও অবকাঠামো খাতে কোরিয়ান বিনিয়োগ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্পায়নে বড় ভূমিকা রাখছে। ইয়ংওয়ান কর্পোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এর উজ্জ্বল উদাহরণ।
তিনি বলেন, কোরিয়ান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা কোইকা (KOICA)-এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি ও অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করছে। কোরিয়ার বিভিন্ন বৃত্তি ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ফলে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা অর্জন করছেন, যা দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ইপিএস (EPS) কর্মসূচির আওতায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত রয়েছেন। তাঁদের পাঠানো রেমিট্যান্স জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করছে।
তিনি আরও বলেন, কোরিয়ান চলচ্চিত্র ও পপ সংস্কৃতি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। এ ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পারস্পরিক সংস্কৃতি বোঝাপড়া ও বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে সহায়ক। পারস্পরিক সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে একটি টেকসই ও কল্যাণভিত্তিক অংশীদারত্ব গড়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র দূতাবাসের কনসাল মোহাম্মদ মহসিন, চট্টগ্রামে কোরিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান পাইক, উরি ব্যাংক চট্টগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক রাকিবুল হাসান, থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের পরিচালক অভিক ওসমান এবং বিডি কে-ফ্যামিলির প্রতিষ্ঠাতা তাসনুভা জাহান।
এ ছাড়া কোরিয়ান কমিউনিটির সদস্য, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আমারবাঙলা/এনইউআ