বাণিজ্য ডেস্ক: মধ্যবিত্তের বাজারের ব্যাগে কমবেশি মাছ উঠলেও মাছ বাজারে হাঁক-ডাকেই মিলিয়ে যাচ্ছে নিম্ন মধ্যবিত্তের দীর্ঘশ্বাস। একটু বড় সাইজের পাঙাশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়, তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২২০ টাকায়। মধ্যবিত্ত শ্রেণি মাছের স্বাদ নিতে পারলেও নিম্নবিত্ত কিংবা শ্রমজীবী মানুষজন কেনার কথা চিন্তাও করতে পারছেন না।
শুক্রবার (৩১ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মগবাজার এবং আশপাশের কাঁচাবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হরেক রকমের এবং ভিন্ন-ভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় মাছের ব্যাপক সমাহার। রুই, কাতলা, ইলিশ, গলদা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ি, হরিণা চিংড়ি, কার্ফু, নলা, কই (দেশি), কৈ (থাই), শিং, মাগুর, শৈল, টেংরা, পাঙাশ, তেলাপিয়া, কাচকি, মলা, পাবদা, রূপচাঁদা, আইড়, শিং, টাকি, বোয়ালসহ বাজারজুড়ে অসংখ্য মাছ উঠেছে। তবে এসব মাছ একদামের ঘরে আটকে আছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি কেজি বড় রুই মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, মাঝারি রুই ২৬০-২৯০ টাকা, রুই মাছের পোনা ২০০-২৫০ টাকা, কাতলা ৩০০-৩৫০ টাকা, বড় পাঙাশ ২০০-২৫০, ছোট পাঙাশ ১৫০-২০০ টাকা, পাবদা (আকারভেদে) ৪০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি (আকারভেদে) ৬৫০-৭৫০ টাকা ও শিং মাছ (দেশি ও থাই) ৩০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার ছোট, মাঝারি, বড় ইলিশ যথাক্রমে ৭০০-৮০০, ১০০০-১৩০০ ও ১৪০০-২০০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ছোট মাছও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। কাঁচকি মাছ ৩০০ টাকা, মলা মাছ ৩০০-৪০০ টাকা, কৈ মাছ ৩৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে সামুদ্রিক মাছের মধ্যে সুরমা, রুপচাঁদা, লাল কোরাল এবং বাটা মাছ ২০০-১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারভেদে এসব মাছের দাম ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত কমবেশি হতে দেখা গেছে।
অমিত হাসান নামের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, সামনে মাছের দাম আরো বাড়ার সম্ভবনা আছে। কারণ, বন্যার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ মাছের ঘের ভেসে গিয়েছে। যার প্রভাব এখন বাজারে পড়বে। মাছের দাম আগে যেমন ছিল আজও তেমন আছে। হয়ত ছুটির দিন হিসেবে পাঁচ-দশ টাকা এদিক সেদিকে হচ্ছে।
রিয়াজ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, শুক্রবার দিন আমরা বেশি করেই মাছ রাখি। কারণ সবাই ছুটির দিন হিসেবে একটু বেশি কেনাকাটা করে। অনেকেই পুরো সপ্তাহের কেনাকাটা করে রাখে। বিক্রিও ভালোই হয়। আর দামও আগের মতোই আছে। তবে সবকিছুর দাম যেমন বেশি মাছের দাম একটু বেশি। মাছ চাষেও এখন অনেক বেশি খরচ। তারপর ঢাকায় আনার পরিবহন খরচও বেশি। সবমিলিয়ে ঢাকার সব খুচরা বাজারগুলোতেই বাড়তি দামের প্রভাব একটু রয়েছে।
অপরদিকে ক্রেতারা বলছেন, একটু ভালো এবং বড় সাইজের মাছ নিতে হলে দেড় হাজার টাকার নিচে নেওয়া যাচ্ছে না। সেটা রুই হোক আর কাতলা হোক। আর পাঙাশ মাছ একটি নিতে গেলেও ৫০০-৭০০ টাকার উপরে দাম পড়ে যায়। সেজন্য এখন মাছ ভাগ হিসেবে কেনার সুযোগ থাকা দরকার।
মুসা মনির নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, মেসের জন্য বাজার করতে এসেছি। এখন মাথা ঘুরিয়ে যাচ্ছে। এক মাছ কিনেই মনে হচ্ছে সব টাকা শেষ হয়ে যাবে। তেলাপিয়া আর পাঙাশ ছাড়া অন্য কোনো মাছ কেনার সাহস করতে পারছি না। দাম এমন বেশি হলে আমাদের মতো শিক্ষার্থী বা মেসের বাসিন্দাদের মাছ খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে।
সাজু আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ঢাকার অধিকাংশ বাজারগুলোতে মাছ বলতে রুই, কাতলা, ইলিশ মাছই। আর আছে পাঙাস এবং তেলাপিয়া। সবকিছুর যেমন বাড়তি দাম তেমনি মাছেরও একই অবস্থা। সেজন্য যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী কমবেশি কিনে চালিয়ে নিতে হচ্ছে। তবে রমজান মাসে যেমন বিভিন্ন জায়গায় সাশ্রয়ী দামে সরকারিভাবে মাছ-মাংস বিক্রি হয়েছিল এখনো যদি মাসে অন্তত একবার এই ব্যবস্থা করা যায় তাহলে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য ভালো হয়।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            