বগুড়ায় যৌতুকের দাবিতে এক গর্ভবতী গৃহবধুকে নির্যাতন সহ পেটে লাথি মেরে বাচ্চা মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সহ শশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে নন্দীগ্রাম থানায় এজাহার দায়ের করেছেন রুমকি বেগম নামের এক গৃহবধু।
অভিযুক্ত উপজেলার ৪ নং ইউনিয়নের থালতা মাঝগ্রাম গ্রামের মোঃ একরাম হোসেনের ছেলে আমিনুল ইসলাম, স্বামীসহ নোনদ মোছাঃ তানজিলা তহমিনা, শশুর মোঃ একমার হোসেন, সৎ ছেলে মোঃ আবু সাঈদ, শাশুরি মোছাঃ আছমা বিবির নাম উল্লেখ করে এই এজাহার দায়ের করেন গৃহবধূ।
এজাহার ও প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত ১ বছর পূর্বে ভুক্তভোগী গৃহবধু রুমকি বেগম হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম ধর্ম গ্রহন করে বগুড়ার নন্দীগ্রাম নিবাসী আমিনুল ইসলামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর থেকেই স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য গৃহবধু রুমকি বেগমকে নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য এই পর্যন্ত ৩ লক্ষ টাকা দিলেও নির্যাতন কমেনি।
গত ২২ জুন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামীসহ অভিযুক্ত শশুর বাড়ির লোকজন চুলের মুঠি ধরে পেটে লাথি মারে এবং লাঠির আঘাতে জখম করে। গৃহবধুর আর্তচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানতে পারেন পেটে লাথি মারার কারনে পেটের বাচ্চা মারা গেছেন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত স্বামীসহ শশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় এই এজাহার দায়ের করেন এবং স্বামীর বাড়ি ফিরে যান।
উক্ত বিষয়ে গৃহবধু রুমকি বেগম সাংবাদিকদের জানান, আমি গর্ভবতী জানা সত্বেও স্বামীসহ শশুর বাড়ির লোকজন আমাকে অমানবিক নির্যাতন ও মারধর করেছে। পেটে লাথি মারার কারনে বাচ্চা মারা গেছে। আমি যদি কোন অন্যায় করে থাকি তাহলে আমাকে মারধর করুক বা মেরে ফেলুক। আমার পেটে জন্ম নেয়া অবুঝ শিশু কি অন্যায় করেছে? তারা আমার সন্তানকে মারলো কেন? একজন মা হিসেবে অবশ্যই আমার সন্তানের অপমৃত্যুর সাথে জরিত সবার শাস্তি চাই, এই জন্য চিকিৎসা শেষে মেডিকেল থেকে সরাসরি থানায় গিয়ে মামলা করে অভিযুক্ত স্বামীর বাড়িতেই এসে উঠেছি। কারন আমি সংসার ভাংতে চাই না, তবে অপরাধীর শাস্তি চাই। এ বিষয়ে ওসি স্যার আমাকে আইনগত সকল সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে, অভিযুক্ত স্বামী আমিনুল ইসলাম জানান, থানা পুলিশ বাদীর সাথে মিমাংসা করার কথা বলেছে, তাই বাদীর সাথে মিমাংসার প্রস্ততি চলছে। সেই সাথে তিনি সাংবাদিকদের নিউজ না করার জন্য অনুরোধ জানান।
নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাহারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যৌতুক দাবীতে নির্যাতন ও পেটে লাথি মেরে বাচ্চা মেরে ফেলার অভিযোগে এক গৃহবধু থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
আমারবাঙলা/ইউকে