জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেওয়ায় কিশোরগঞ্জের তিন যুবলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরা হলেন- ইটনা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কবির শ্যামল, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান সোহেল ও ইটনা উপজেলা যুবলীগের সদস্য বাছেত আহমেদ। তবে শ্যামল ও বাসেত আগেই সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বলে জানা গেছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল, দুই যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল ও মো. রুহুল আমিন খানের যৌথ স্বাক্ষরে আলোচিত তিন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কারের নোটিশের শীর্ষে বিষয় হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার’। বহিষ্কারের কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে, এরা তিনজন এনসিপির ইটনা উপজেলা কমিটিতে যোগ দিয়েছেন এবং শ্যামল গত শনিবার জেলা শহরের পুরানথানা এলাকায় এনসিপির পথসভায় বক্তৃতা করেছেন, যা যুবলীগের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। নোটিশে এনসিপিকে ‘জুলাই সন্ত্রাসীদের দল’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়েছে। নোটিশে তিনজনের এনসিপিতে যোগ দেওয়ার ঘটনাকে ‘খুনিদের সঙ্গে ঐক্য ও সংহতি ঘোষণা’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশ মোতাবেক গঠনতন্ত্রের ২২(ক) ধারায় চূড়ান্তভাবে যুব লীগের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল স্তরের কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হলো।
বহিষ্কারের নোটিশটি জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান রবিবার রাত ১১টার দিকে তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। এরপরই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও যার যার ফেসবুকে নোটিশের কপিটি শেয়ার করেছেন।
এনসিপির দেশব্যাপী পদযাত্রার অংশ হিসেবে গত শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জের পুরান থানা এলাকার তিন রাস্তার মোড়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের পথসভা ছিল। সেই পথসভার মঞ্চে গোলাম কবির শ্যামলকেও বক্তৃতা করতে দেখা গেছে। বক্তৃতার দৃশ্যটি ফেসবুকেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরই বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে। শ্যামলের বাবা ওমর ফারুক ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আর শ্যামল ছিলেন ইটনা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
উল্লেখ্য, এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গত ৫ জুনের স্বাক্ষরে তিন মাসের জন্য এনসিপির ২১ সদস্যের ইটনা উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এতে প্রধান সমন্বয়কারী হয়েছেন মো. নাজমুল ঠাকুর। যুগ্ম-আহবায়কারী আছেন চারজন, আর সদস্য আছেন ১৬ জন। কমিটিতে গোলাম কবির শ্যামলকে দুই নম্বর সদস্য, কামরুজ্জামান সোহেলকে চার নম্বর সদস্য, আর বাসেত আহমেদকে ১১ নম্বর সদস্য করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য গোলাম কবির শ্যামলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও বন্ধ পাওয়া যায়। অপর বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সোহেলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে বহিষ্কৃত অপর নেতা বাছেত আহমেদ সমকালকে বলেন, তার প্রকৃত নাম মো. বাছেদ মিয়া। তিনি কমিটির ১১ নম্বর সদস্য। তিনি জানান, যুবলীগে মূল্যায়ন না পাওয়ায় অনেক আগেই তিনি পদত্যাগ করেছিলেন এবং নিষ্ক্রিয় ছিলেন। এখন তিনি এনসিপিতে আছেন।
ইটনা উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মো. নাজমুল ঠাকুরকে বহিষ্কারাদেশ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে বলেন, ‘গোলাম কবির শ্যামল ২০১৮ সালেই যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার বাবা ওমর ওমর ফারুক ইটনা সদর ইউয়িন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি পাস করার পরও তাকে দলের নেতারা ফেল করিয়েছিলেন অভিযোগ তুলে শ্যামল যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এর পর আর কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন না।’ স্থানীয় বিএনপির লোকজনসহ কিছু মানুষ শ্যামলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এ ধরনের পদত্যাগের ঘটনা সাজিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নামজুল ঠাকুর।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুলসহ অন্য যুগ্ম-আহ্বায়কদের ফোন করলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আমারবাঙলা/জিজি
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            