সংগৃহীত
রাজনীতি

ওবায়দুল কাদের ভারতে পালিয়ে গেছেন?

আমার বাঙলা ডেস্ক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শুক্রবার (৮ নভেম্বর) শেষরাতে ভারতে পালিয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।

পুলিশ অবশ্য শনিবার (৯ নভেম্বর) মধ্য রাতে তাকে ধরতে চট্টগ্রামের হালিশহরের শান্তিবাগে স্ত্রী ইশরাতুন্নেসার বড় ভাই নুরুল হুদার বাসায় অভিযান চালিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনেকেরই ধারণা, শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে রবিবার (১০ নভেম্বর) দলীয় কর্মসূচি ঘোষণার পর ওবায়দুল কাদের নিজের দায়িত্ব ও এক ধরনের ঝুঁকি এড়াতে তড়িঘড়ি করে পালিয়ে গেছেন।

অবশ্য ভারতেও তাকে আত্মগোপনে থাকতে হবে। দেশটিতে আগে থেকে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের রোষানল থেকে বাঁচতে হবে তাকে। তাদের অধিকাংশই কাদেরের ওপর নাখোশ। দলের এ অবস্থার জন্য কাদেরকেই দোষারোপ করেন তারা। ফলে ওবায়দুল কাদেরকে সামনে পেলে তারা হেনস্তা করতে পারেন।

আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা দলের সাধারণ সম্পাদকের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে রোষানলের শিকার হয়ে নাজেহাল হয়েছেন ভারতে পলাতক একজন সাবেক মন্ত্রী। তার বাড়ি কুমিল্লায়। এ জন্যই ভারত থেকে ওবায়দুল কাদেরের দ্রুতই সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, সিঙ্গাপুর কিংবা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ মাঝারি পর্যায়ের অনেক নেতা ভারতে পালিয়েছেন। তাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, ওবায়দুল কাদের ভারতের কলকাতায় পৌঁছেছেন বলে তারা শুনেছেন। তবে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি। টেলিফোনেও কথা হয়নি।

নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, ওবায়দুল কাদের শুক্রবার শেষ রাতে সিলেট কিংবা ময়মনসিংহ সীমান্ত হয়ে অবৈধ পথে ভারত যান। পাসপোর্ট ছাড়া বিমানে দেশ ছাড়ার সুযোগ না থাকায় তাকে শুক্র ও শনিবার সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করতে হয়েছে। পরে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে রবিবার ভারতের অভ্যন্তরীণ পথে চলাচলকারী বিমানে করে তিনি কলকাতা যান। স্ত্রী ইশরাতুন্নেসা তার সঙ্গে ভারত যাননি।

জানা যায়, ভারতে যাওয়ার আগে ওবায়দুল কাদের আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে রাজধানীর গুলশান থেকে যশোরে যান। সেখানে তিনি তার নিকটাত্মীয় প্রভাবশালী একজন সরকারি কর্মকর্তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নিয়ে যে কোনো মুহূর্তে ভারতে ঢোকার অপেক্ষায় থাকেন। এর আগে তিনি গুলশানে একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। সেখানে আগে থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না। পরে ২৪ আগস্ট পান্না ভারতীয় সীমান্তে মারা যান।

এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সর্বশেষ অবস্থান জানার জন্য গত দু’দিন তার মোবাইলের দুটি নম্বরে দফায় দফায় ফোন করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপও ছিল বন্ধ।

আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদেরবিরোধী নেতাদের (ভারতে আত্মগোপনে থাকা) কাছে দলের সাধারণ সম্পাদকের অবস্থান জানতে চাইলে প্রায় সবাই একবাক্যে বলেছেন, তিনি কলকাতায়। তবে রোষানল এড়ানোর জন্য আত্মগোপনে আছেন।

ওবায়দুল কাদের সরকার পতনের শেষের দিকে বেশ বিতর্কিত হন। বিশেষ করে ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন মোকাবিলায় ছাত্রলীগই যথেষ্ট’ মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ওই সময়েই ওবায়দুল কাদের দলের ভেতরে কোণঠাসা হয়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারান। অথচ ক্ষমতায় থাকাকালে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় থাকতেন তিনি।

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থান হারান। এর ফলে তার বদলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ ও আফম বাহাউদ্দিন নাছিমের নামে সাংগঠনিক বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও দলীয় নেতার। তিনি পারতপক্ষে কারো ফোন ধরতেন না। ফলে নেতাকর্মীর সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছিল। আবার কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতারা সাংগঠনিক বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের দুর্ব্যবহারের মুখোমুখি হতেন। বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদেরের ‘খেলা হবে’ ঘোষণা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরাও হাস্যরস করতেন। অবশ্য ‘খেলা হবে’– এই ঘোষণা দিয়ে ওবায়দুল কাদের এখন নিজেই লাপাত্তা।

দামি ঘড়ি ও কোট-টাই ব্যবহারে অভ্যস্থ সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিয়মিত নেতিবাচক ট্রল চলত। এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক এক সভায় ‘কাউয়া’ শব্দ উচ্চারণ করেও ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। তিনি গত বছরের ২৯ জানুয়ারি বলেছিলেন, ‘আমরা এই দেশে জন্মেছি, এই দেশে মরব, পালাব না। কোথায় পালাব! পালাব না। প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব।’ এ নিয়ে রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মাঝেও তিনি এখন হাসির পাত্র। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এখন তিনি নেই।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

নরসিংদীর মনোহরদীতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

আজ ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। উদয়ের পথে শুনি কার বাণী—

হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরীফ ওসমা...

অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি'র জোরদার নজরদারি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সর্বো...

এনইউবিতে চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে ‘চায়না আওয়ার’ অনুষ্ঠিত

নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এনইউবি) ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে চীনা ভাষা ও স...

র‍্যাবের অভিযানে ৫৪ লিটার মদসহ গ্রেপ্তার ১

গোপন সূত্রের বরাতে র‍্যাবের কাছে খবর আসে একটি নির্দিষ্ট বাড়িতে মাদক ক্রয়-...

রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি’র উঠান বৈঠক ও দোয়া মাহফিল

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ৯নং ওয়ার্ড খুরশেদতালু এলাকায় হুমাম কাদের চৌ...

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে কক্সবাজার প্রশাসনের আলোচনা সভা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে আলোচনা সভা ও জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির...

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা কক্সবাজারে, স্বাগত জানালেন পুলিশ সুপার

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণা...

লালদীঘিতে নবনির্মিত সিএমপি হেডকোয়ার্টার্স ভবনের উদ্বোধন

চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘিতে নবনির্মিত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) হেডক...

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ ১৪ ডিসে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা