কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ‘নেপথ্যে’র ব্যক্তি হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া শাহ পরানের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শাহ পরান ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফজর আলীর ছোট ভাই।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শুনানি শেষে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মমিনুল হক তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানির সময় শাহ পরান আদালতে হাজির ছিলেন। কুমিল্লার আদালত পুলিশের পরিদর্শক সাদেকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পরিদর্শক সাদেকুর রহমান বলেন, শাহ পরানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত রবিবার আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক রুহুল আমীন। আজ বুধবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়। শুনানি শেষে শাহ পরানের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পরে আসামিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা তদন্ত কর্মকর্তা পরে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগার থেকে হেফাজতে নেবেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলার বুড়িচং উপজেলা এলাকা থেকে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করেন র্যাবের সদস্যরা। এরপর শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকায় র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে র্যাব। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে মুরাদনগর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাঁকে মুরাদনগর থানায় হওয়া নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়। এ মামলায় নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
গত ২৬ জুন দিবাগত রাতে উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি গ্রামে সুদের বিনিময়ে দেওয়া টাকার খোঁজ নিতে এসে খালি বাড়ি পেয়ে ফজর আলী নামের ওই ব্যক্তি প্রথমে ভুক্তভোগীর বাবার টিনের ঘরটির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ওই নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান। বিষয়টি টের পেয়ে ফজর আলীর পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর করেন স্থানীয় কয়েক যুবক। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
এর মধ্যে ধর্ষণের ঘটনায় ২৭ জুন এবং বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ২৯ জুন থানায় মোট দুটি মামলা করেন ভুক্তভোগী। নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় এ পর্যন্ত শাহ পরানসহ পাঁচজন কারাগারে আছেন। আর ঘটনার সময় পিটিয়ে ফজর আলীর হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আমারবাঙলা/জিজি