গাজীপুর জেলা যুবদলের আহবায়ক সদস্য লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের জমি জবরদখল করার অভিযোগ উঠেছে।
৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকালে যুবদলনেতা লিয়াকত আলী তার নিজস্ব বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্য নিয়ে (শ্রীপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড) ছাপিলাপাড়া গ্রামের পুরাতন হ্যামস কারখানার পেছনে স্থানীয় মৃত হাজী আব্দুল জব্বারের স্ত্রী সাবেরন নেসার আধা বিঘা জমি জবরদখল করে।
জবরদখলের সময় ষাটোর্ধ্ব ওই নারী বাধা দিতে গেলে তাকে কারখানার ভেতরে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের শেষ সময় পর্যন্ত আটক রাখা হয়েছিল তাকে। এ বিষয়ে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে, তবে সাবেরন নেসাকে উদ্ধার করেনি পুলিশ। পরবর্তীতে দখলজজ্ঞ সম্পন্নের পর তাকে ছেড়ে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী সাবেরন নেসার পুত্রবধূ শরীফা আক্তার বাদী হয়ে যুবদলনেতা লিয়াকত আলীসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, ছাপিলাপাড়া গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের সন্তান মো. রোমান (৪৫), মৃত মনির উদ্দিনের সন্তান লিয়াকত আলী (৪৫), সিরাজ উদ্দিনের সন্তান জাহাঙ্গীর (৩৫), মৃত মকবুল হোসেনের সন্তান মিলন (৩৫), মনির হোসেন (৪০), আলী হোসেন (৪০), ছালামের সন্তান মামুন (৩০) ও মৃত আবসু মিয়ার সন্তান রাসেল (৩৫) ।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে সাবেরন নেসার কোটি টাকার জমি জবরদখল করে হ্যামস কারখানা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়। এ সময় সাবেরন নেসা ও তার সন্তান মফিজ উদ্দিন বাধা দিতে গেলে সাবেরন নেসাকে আটকে রাখে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে মফিজ উদ্দিনকে মারধর করার জন্য উদ্যত হলে সে তার নিজ বাড়িতে গিয়ে গাঁ ঢাকা দেয়। অতঃপর লিয়াকত বাহিনী তার বাড়িতে ঢুকে ঘরের দরজা ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। ওই সময় লিয়াকত বাহিনীর ভয়ে কেউ সামনে আসেনি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
জমি জবরদখলের সময় ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, লিয়াকত বাহিনীর সকলের হাতে লাঠি এবং দেশীয় অস্ত্র রয়েছে। তারা ভুক্তভোগী পরিবারকে ব্যাপক ভয়ভীতি দেখিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে এবং জমি জবরদখল করছে। ওই ভিডিওচিত্রে শ্রীপুর পৌর শ্রমিকদলের হারুন মিয়া ও মৎসজীবি দলের নাহিদ হাসান শুভকে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
অভিযোগকারী শরীফা আক্তার বলেন, এর আগে আওয়ামী লীগের সময়ে আ. লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের থেকে জোরপূর্বক এক বিঘা জমি জবরদখল করেছিল। বর্তমানে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সময়ে এসে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা আধা বিঘা জমি জবরদখল করে নিল, আমাদেরকে প্রচুর মারধর করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে তারা এসব কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। আমরা বিচার পাবো কোথায়?
শ্রীপুর পৌর যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার খান বলেন, দলে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, ইতিপূর্বেও যুবদলনেতা লিয়াকতকে বিভিন্ন অপকর্মের দ্বায়ে দুইবার বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আবারও জেলা যুবদলের আহবায়ক সদস্য হয়ে তার পূর্বের রুপ ফিরে এসেছে। ওই পরিবারের লোকজনকে ব্যাপকভাবে মারধর করতে দেখেছি। তাদের শরীরের ক্ষত চিহ্ন আমরা দেখেছি। লিয়াকতের মতো বিএনপি'র নাম ভাঙ্গিয়ে যারা দলের বদনাম করছে, তাদেরকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার দাবি জানাচ্ছি ।
সাবেরন নেসার সন্তান আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘এর আগেও লিয়াকত তার ক্ষমতার দাপটে আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিল, আজ বাড়িঘর ভাঙচুর করে জমি জবরদখলের মাধ্যমে হুমকির বাস্তবায়ন ঘটিয়েছে লিয়াকত ও তার বাহিনী’।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত লিয়াকত আলীকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে কল কেটে দেন। এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমার বাঙলা/এনবি
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            