ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাংশে বসবে অমর একুশে বইমেলা। আর মাত্র দিন দুয়েক পর প্রাণের এ মেলা শুরু হবে। এখন মেলা প্রাঙ্গনে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
কোথাও হাতুড়ি পিটিয়ে পেরেক ঠোকা হচ্ছে, কোথাও বা চলছে বাঁশ কাটার কাজ। কেউ কেউ স্টলের সাজসজ্জায় ব্যস্ত। প্যাভিলিয়নগুলো ধীরে ধীরে সেজে উঠছে নানা রঙে নানা বর্ণে।
প্যাভিলিয়ন ও স্টল নির্মাণের কাজে মগ্ন শ্রমিকরা। মাঝেমধ্যেই প্রকাশকরা আসছেন। তাড়া দিচ্ছেন কাজের। বাঙালির প্রাণের এ উৎসবের এবারের প্রতিপাদ্য ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এবার মেলায় ইউনিটের সঙ্গে বাড়ছে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। গত বছর বইমেলায় অংশ নেয় ৫১টি প্রতিষ্ঠান, সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯৩টিতে। এরই মধ্যে প্যাভিলিয়ন (২৪×২৪), প্যাভিলিয়ন (২০×২০), চার ইউনিট, তিন ইউনিট, দুই ইউনিট (সাধারণ), এক ইউনিট (সাধারণ) এবং শিশুদের জন্য মেলার অংশে শিশু ইউনিট-৩, ২ ও ১ হিসাব করে লটারির মাধ্যমে স্টল বরাদ্দের কাজ শেষ হয়েছে।
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ স্টলের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে এ নিয়ে চিন্তিত নন প্রকাশকরা। তারা বলছেন, এক দিনের মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করা সম্ভব। এবারের বইমেলা গত বছরের চেয়ে বেশি জমজমাট হবে বলে আশা বাংলা একাডেমির।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি প্রকাশনীর প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করছিলেন শ্রমিক মো. আলামিন। তিনি বলেন, হাতে অল্প সময়। তাই এখন ব্যস্ত সময় কাটছে আমাদের। দুদিনের মধ্যেই প্যাভিলিয়নের অবকাঠামো ও সাজসজ্জার কাজ শেষ করা যাবে বলে আশা করছি।
এবারের বইমেলা পলিথিনমুক্ত রাখার কথা জানিয়েছে আয়োজক কমিটি। এ ছাড়া বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে ‘জুলাই চত্বর’। এই চত্বরে ফুটিয়ে তোলা হবে গণ-অভ্যুত্থানের চিত্র।
বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক ভাষা ইনস্টিটিউটের স্টল নির্মাণ করছিলেন মো. বকুল। জানালেন, সাত-আট বছর বইমেলার স্টল ও প্যাভিলিয়নের কাজ করছেন তিনি। এ বছর নির্মাণ করছেন আন্তর্জাতিক ভাষা ইনস্টিটিউটের স্টল। মো. বকুল জানান, বইমেলার স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণ থেকে বেশ ভালোই আয় হয়। তাই প্রতি বছর এই কাজ করার জন্য বেশ আগ্রহী থাকেন।
ধ্রুব প্রকাশনীর প্রকাশক আবুল বাসার ফিরোজ বলেন, বইমেলার প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। মেলা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে স্টল নির্মাণের সব কাজ শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।
বাংলা প্রকাশের প্রকাশক আহসান আল আজাদ বলেন, বুধবারের মধ্যে স্টলের কাজ শেষ হবে। এরপর স্টলে সম্পূর্ণ সাজগোছ ও বই গোছানোর কাজ করতে হবে।
বাংলা একাডেমির বইমেলা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন বলেন, ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে ধারণ করে এবারের বইমেলা আয়োজন করা হচ্ছে। মেলায় ১০০-এর মতো স্টল বাড়ছে। গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই ব্যবহার করা হচ্ছে এবার।
তিনি বলেন, প্রকাশকদের মধ্যে নানা মত এবং মতান্তর আছে। তাই শুরুতে প্রকাশক ও মেলা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নিয়ে কিছু মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে প্রকাশক ও আয়োজক কমিটির আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়েছে। এবারের বইমেলা নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আশা করছি, পাঠকদের একটি ভালো বইমেলা উপহার দিতে পারব।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            