নরসিংদীতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে নরসিংদী পৌরশহরের বড় বাজার এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নরসিংদী পৌর প্রশাসনের দুজন কর্মচারীসহ মোট চারজন আহত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, সড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে নরসিংদী পৌরসভা মোড় থেকে বড় বাজার এলাকায় অভিযান শুরু হয়। ফলপট্টিতে অভিযান চালানোর সময় একদল দুর্বৃত্ত 'ভুয়া ভুয়া' স্লোগান দিতে থাকে এবং একপর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।
হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন নরসিংদী পৌরসভার ভেকুচালক টিপু সুলতান, নিরাপত্তা কর্মী সবুজ মিয়া, এবং ছাত্র প্রতিনিধি রাকিব মিয়া-সহ আরও একজন। আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আহত ভেকুচালক টিপু সুলতান বলেন, "প্রশাসকের নির্দেশে আমরা উচ্ছেদ অভিযানে গিয়েছিলাম। ফলপট্টি এলাকায় গেলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ স্যারসহ আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। আমি ভেকু নিয়ে সামনে চলে আসার সময় তারা হাতুড়ি ও ইট দিয়ে আমাকে আঘাত করে, এতে আমি গুরুতর আহত হই।"
আহত ছাত্র প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলীও জানান, অভিযানে উপস্থিত থাকার সময় দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর হামলা চালায়, যাতে তারা চারজন আহত হন।
নরসিংদী বাজার বণিক কমিটির সভাপতি বাবুল সরকার দাবি করেন, এই হামলার সঙ্গে কোনো ব্যবসায়ী জড়িত নন। তিনি বলেন, "জেলা প্রশাসনের অভিযানে ব্যবসায়ীরা কোনো হামলা চালায়নি। একদল উচ্ছৃঙ্খল ও দুর্বৃত্ত এই হামলা চালিয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেছি এবং ব্যবসায়ীরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।"
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, "আমরা নিয়মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছি। বুধবার ফলপট্টিতে অভিযান চালানোর সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ আমাদের দিকে তেড়ে এসে হামলা করে। এতে আমাদের পৌরসভার দুজন কর্মচারীসহ চারজন আহত হয়েছেন।"
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন জানান, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং তারা দাবি করেছেন হামলার সঙ্গে তারা জড়িত নন। জেলা প্রশাসক বলেন, "ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। এ হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।" তিনি আরও জানান, সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এর আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল এবং জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হলধর দাস এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আগে সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কঠোর হলে হয়তো পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর এ ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটত না।"
তিনি আরও বলেন, "শুধু গ্রেপ্তার করলেই হবে না, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার নিশ্চিত করে সেটা জনগণের সামনে তুলে ধরলে অপরাধীরা ভয় পাবে এবং অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।"
আমারবাঙলা/এফএইচ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            