ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা একসঙ্গে দুটি বিশ্বকাপের আয়োজক দেশের নাম ঘোষণা করেছে। ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ইউরোপ, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার ছয়টি দেশ; আর ২০৩৪ বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করবে সৌদি আরব।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত বিশেষ ফিফা কংগ্রেসে সদস্যদেশগুলোর ভোটে আসর দুটির আয়োজক চূড়ান্ত করা হয়।
২০৩০ বিশ্বকাপে মূল আয়োজক হিসেবে থাকবে স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কো। আর ফিফা বিশ্বকাপের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে টুর্নামেন্টের শুরুতে একটি করে ম্যাচ আয়োজন করবে উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে। দুই আসরের সাত আয়োজকের মধ্যে সৌদি আরব, পর্তুগাল, মরক্কো ও প্যারাগুয়ে আগে কখনো বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজন করেনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ফিফার ভার্চ্যুয়াল কংগ্রেসে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ২১১টি সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিশ্বকাপের আয়োজক এবং শতবর্ষ উদযাপন নিয়ে দুটি ভোট হয়। প্রথম ভোটের মাধ্যমে ২০৩০ শতবর্ষ উদযাপনের আয়োজক হিসেবে উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ের নাম চূড়ান্ত হয়। এই তিনটি দেশ যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চেয়েছিল। তবে পরে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। ১৯৩০ সালে প্রথম ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল উরুগুয়ে।
সদস্যদেশগুলোর দ্বিতীয় ভোটে ২০৩০ বিশ্বকাপের জন্য স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কো এবং ২০৩৪ বিশ্বকাপের জন্য সৌদি আরবকে আয়োজক হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়।
ভার্চ্যুয়াল সভায় উত্থাপিত বা প্রস্তাবিত নামের প্রতি সমর্থন প্রকাশে উপস্থিত প্রতিনিধিদের ক্যামেরার সামনে হাততালি দিতে বলা হয়, যা ভোট হিসেবে গণ্য হয়। অবশ্য বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে কংগ্রেসে উত্থাপিত নামের বাইরে অন্য কোনো নামও ছিল না। ২০৩০ বিশ্বকাপের জন্য স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কো যৌথভাবে এবং ২০৩৪ বিশ্বকাপের জন্য সৌদি আরব এককভাবে বিড করে। বিডে একাধিক দেশ থাকলে ভোটাভুটির প্রক্রিয়া ভিন্ন হতো।
দুটি আসরের মধ্যে ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক নিয়ে ফুটবল–বিশ্বে আলোচনা–সমালোচনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির মানবাধিকার ও শ্রম পরিস্থিতির প্রতি উদ্বেগ আছে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার।
ফিফা কংগ্রেসে ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক বিষয়ে ভোটদানে বিরত থেকেছে নরওয়ে। সৌদি আরবকে আয়োজক স্বত্ব দেওয়ার কারণে নয়, বরং যে বিডিং প্রক্রিয়ায় দেশটিকে আয়োজক হওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে, তার প্রতিবাদে নরওয়ের এমন অবস্থান বলে লিখেছে বিবিসি।
ইউরোপের আরেক দেশ সুইজারল্যান্ড ভোটের পূর্বে নিজেদের আপত্তির বিষয়টি আলোচ্য বিষয়বস্তুতে যুক্ত করার অনুরোধ করে রাখে।
২০৩৪ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ৪৮ দল নিয়ে কোনো একক দেশের প্রথম বিশ্বকাপ। এর আগে ২০৩০ ও ২০২৬— দুটি ৪৮ দলের বিশ্বকাপই হবে একাধিক দেশের যৌথ আয়োজনে।
এ ছাড়া সৌদি আরব হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ আয়োজন করা এশিয়ার চতুর্থ এবং মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় দেশ। এর আগে ২০২২ আসর আয়োজন করেছে কাতার, ২০০২ আসর যৌথভাবে আয়োজন করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান।
সৌদি আরবের বিশ্বকাপ আয়োজক স্বত্ব পাওয়াকে ভালো মনে করছে না মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ ২১টি মানবাধিকার সংস্থার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অধিবাসী, অভিবাসী কর্মী ও দর্শনার্থী সমর্থকদের জন্য সুপরিচিত ও গুরুতর ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সৌদি আরবকে টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব প্রদানবিষয়ক ফিফার সিদ্ধান্তটি একটি বড় বিপদের মুহূর্ত চিহ্নিত করছে।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হেড অব লেবার রাইটস অ্যান্ড স্পোর্টসের প্রধান স্টিভ ককবার্ন বলেন, ‘প্রাপ্ত সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে ফিফা জানে সৌদি আরবে মৌলিক সংস্কার ছাড়াই শ্রমিকদের শোষণ করা হবে এবং এমনকি মেরেও ফেলা হবে। তবু তারা এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            