চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আজিমপুর গ্রামের সেকান্দার মাঝির বাড়িতে এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে নিহতের নিজ কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত আয়েশা সিদ্দীকা (১৯) ওমানপ্রবাসী লিয়াকত আলীর স্ত্রী।
আয়েশার ঘরে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
উদ্ধার হলো ‘চিরকুট’, সন্দেহের তীর স্বামীর দিকে
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে, যা এই আত্মহত্যার ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। চিরকুটে লেখা ছিল—
“আমাকে মাফ করে দিবেন সবাই। এমন মানুষের সাথে সংসার করার চাইতে আমি নিজেই মরে যাওয়া ভালো।”
এই চিরকুটটি আয়েশার স্বামী লিয়াকত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, তিন বছর আগে আয়েশার সঙ্গে লিয়াকত আলীর বিয়ে হয়। লিয়াকত তিন মাস আগে প্রবাসে যান।
এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, লিয়াকত ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শান্ত-শিষ্ট হলেও আয়েশা কিছুটা মানসিক অস্থিরতায় ভুগছিলেন। অন্যদিকে, স্থানীয়দের কেউ কেউ এটিকে নিছক আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
নিহতের পরিবারও এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে। তবে ফটিকছড়ি থানার তদন্তকারী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, এ বিষয়ে এখনো থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।
তদন্তকারী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের (পোস্টমর্টেম) জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, লাশের মুষ্টিবদ্ধ হাত, জিহ্বা বের হয়ে আসা এবং গলায় রশির দাগ—এগুলো আত্মহত্যার প্রাথমিক লক্ষণ।
তিনি আরও বলেন, “অভিযোগ ও তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পুলিশ চিরকুটটির হাতের লেখা এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা খতিয়ে দেখছে। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর এই ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আমারবাঙলা/এনইউআ