টঙ্গীর তুরাগ নদীর দুই তীরে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছেন শূরায়ে নেজাম (মাওলানা জুবায়েরপন্থী) ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। বৃহস্পতিবার জুবায়েরপন্থীদের হামলায় সাদপন্থী ৫ জন আহত ও মামলার ঘটনায় শুক্রবার সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান।
জানা গেছে, গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালন করেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।
এরপর ইজতেমা মাঠে ২০ ডিসেম্বর থেকে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালনের ঘোষণা দেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীরা। তবে জুবায়েরপন্থীরা ময়দান না ছাড়ায় সাদপন্থীরা ময়দানে আসতে পারছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সাদপন্থীরা ইজতেমা মাঠের পশ্চিম অংশে যান। এ সময় তাদের বাধা দেন জুবায়েরপন্থীরা।
ময়দানে প্রবেশ করতে না পেরে সাদ অনুসারীরা পুলিশের সহযোগিতা চাইতে টঙ্গী পূর্ব থানায় যান। পরে পুলিশের সহায়তায় সাদপন্থীরা ময়দানের দিকে রওনা দেন। এ সময় জুবায়েরপন্থীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মন্নুগেইট এলাকায় সাদপন্থীদের মাইক্রোবাসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় কয়েকজন আহত হন।
এ ঘটনায় টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৩৪ জনকে শনাক্ত করে মামলা হয়। এই মামলার প্রতিবাদে বাদ জুমা জিএমপির ডিসি দক্ষিণ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন জুবায়ের পন্থীরা। বর্তমানে তুরাগ নদীর দুই তীরে দুইপক্ষ অবস্থান নিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করছে।
এ বিষয়ে সাদপন্থীদের মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম কালের কণ্ঠকে জানায়, বৃহস্পতিবার জুবায়ের পন্থীদের হামলায় আমাদের ৫ জন সাথী আহত হয়েছেন। এ সময় একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
এই ঘটনায় আমাদের সাথী শিহাব উদ্দিন বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
শূরায়ে নেজামের (জুবায়ের পন্থী) মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান কালের কণ্ঠকে বলেন, সাদপন্থীদের মিথ্যা মামলা প্রতিবাদে আজ বাদ জুমা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, সাদপন্থীদের দেওয়া একটি মামলা হয়েছে। শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
বৃহস্পতিবার টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার ময়দান এলাকায় হামলা চালিয়ে সাদপন্থীদের গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ উঠে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীর বিরুদ্ধে এ ঘটনায় সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি মাওলানা বসির (৫২), মাওলানা আতাউর (৫৪) রেজা আরিফ(৫৫), প্রকৌশলী মহিবুল্লাহ্(৬০), হাজী মনির(৫৫), সহ বেশ কয়েকজন আহত হন।। পরে তাদের উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মন্নুগেট এলাকায় মাওলানা জুবায়েরের পাঁচ শতাধিক অনুসারী অবস্থান নিয়ে প্রায় ঘণ্টা ব্যাপী মহাসড়ক অবরোধ করে। জুবায়ের অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজট দেখা দেয় পরে পুলিশের অনুরোধে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক ছেড়ে ইজতেমা ময়দানে চলে যায়।
২০২৫ সালে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমার উপলক্ষে বিবদমান দুই আয়োজক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। ইতোমধ্যে শূরায়ে নেজাম তাদের জোড় ইজতেমা সম্পন্ন করেছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর সাদপন্থীদের জোড় ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এই অবস্থায় জুবায়ের পন্থীরা ময়দান না ছাড়ায় সাদপন্থীরা ময়দানে আসতে পারছে না।
আমার বাঙলা/এনবি
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            