লিগস কাপে গত পরশু নেকাক্সার বিপক্ষে চোটে পড়েন লিওনেল মেসি। বাধ্য হয়েই ১২ মিনিটের মাথায় মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। তখনই প্রশ্নটি উঠেছে, কত দিনের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে ইন্টার মায়ামি তারকাকে?
বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যম তখন জানিয়েছিল, মেসিকে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে। এমনও হতে পারে, লিগস কাপের বাকি সময়ে মেসিকে না–ও পাওয়া যেতে পারে। তবে ইন্টার মায়ামি পরশু সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ডান পায়ের মাংসপেশিতে ছোটখাটো চোট পেয়েছেন মেসি। এটুকু পড়ে মেসির ভক্তরা প্রশান্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় পড়তে পারেন অন্য কারণে। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি চোট থেকে কবে সেরে উঠতে পারেন, কবে মাঠে ফিরতে পারেন—সে বিষয়ে মায়ামি কিছুই জানায়নি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুধু এতটুকু বলা হয়েছে, মেসির ‘মেডিকেল ছাড়পত্র নির্ভর করছে চিকিৎসাগত দিক থেকে তার উন্নতি এবং (চিকিৎসায়) তার সাড়া দেওয়ার ওপর।’
অর্থাৎ, মেসির চোট গুরুতর কিছু নয়। কিন্তু কবে সেরে উঠবেন, তা এখনো মায়ামি নিশ্চিত করে বলতে না পারায় আরও একটি দুশ্চিন্তার জায়গা আছে। সেপ্টেম্বরে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আছে আর্জেন্টিনার। প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী আগামী ৫ সেপ্টেম্বর, প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলা। অর্থাৎ, আজ থেকে ঠিক এক মাস পরই জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামতে হবে মেসিকে। সে ম্যাচের মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার খেলাধুলাভিত্তিক সাময়িকী এল গ্রাফিকো জাতীয় দলের এই ম্যাচ ঘিরে মেসিকে নিয়ে দুশ্চিন্তার একটি প্রশ্ন তুলেছে। সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে জানিয়ে রাখা ভালো, মায়ামি মেসির চোট নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমগুলোর ধারণা, লিগস কাপ ও মেজর লিগ সকার (এমএলএস) মিলিয়ে মেসিকে আগামী দুটি ম্যাচে মাঠে না–ও দেখা যেতে পারে—আগামী বুধবার লিগস কাপে পুমার বিপক্ষে ম্যাচ এবং এমএলএসে ১০ আগস্ট অরল্যান্ডোর বিপক্ষে ম্যাচ।
এরপর প্রায় এক সপ্তাহের বিশ্রাম আছে মায়ামির সূচিতে। মেসি এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠতে না পারলে তখন ওই প্রশ্ন অবশ্যই উঠবে—আর্জেন্টিনার হয়ে ঘরের মাঠে ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ ম্যাচ কি খেলতে পারবেন মেসি?
এই প্রশ্ন ওঠার কারণ, সেপ্টেম্বরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার যে দুটি ম্যাচ আছে, তার মধ্যে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে বুয়েনস এইরেসে। ইকুয়েডরের বিপক্ষে পরের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে স্বাগতিকদের শহর গুয়াইয়াকিলে। এরপর আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সূচিতে পরবর্তী প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ রয়েছে আগামী বছরের মার্চে। স্পেনের বিপক্ষে ‘ফিনালিসিমা’। কনমেবল এই ম্যাচের সূচি মার্চে ঠিক করলেও এখনো দিন-তারিখ ঠিক করেনি এবং সম্ভাব্য ভেন্যু মেক্সিকো সিটি। তারপর ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা, যেটা অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয়।
অনেকেরই ধারণা, ৩৮ বছর বয়সী মেসি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলেই জাতীয় দলের ক্যারিয়ারে ইতি টানবেন। এ ধারণা এবং আর্জেন্টিনার প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচের বর্তমান সূচি অনুযায়ী, বুয়েনস এইরেসে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ম্যাচটি ঘরের মাঠে জাতীয় দলের হয়ে মেসির সম্ভাব্য শেষ ম্যাচ। প্রশ্ন হলো বর্তমান চোট থেকে সময়মতো সেরে উঠতে না পারলে মেসি ওই ম্যাচে খেলতে পারবেন তো?
আর্জেন্টিনা এরই মধ্যে বাছাইপর্ব থেকে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার টিকিট নিশ্চিত করেছে। কিন্তু মেসির জন্য ভেনেজুয়েলা ম্যাচের গুরুত্ব তো অন্য কারণে—২০২৬ বিশ্বকাপে উড়াল দেওয়ার আগে ঘরের দর্শকদের বিদায় বলে দেওয়া। তবে এমনও হতে পারে, আর্জেন্টিনা এ সময়ের মধ্যে প্রীতি ম্যাচও আয়োজন করতে পারে। কিংবা বিশ্বকাপের আগেও প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারে, সেটা অন্য হিসাব। আপাতত ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ম্যাচটিই আর্জেন্টিনার জার্সিতে হতে পারে ঘরের মাঠে মেসির শেষ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ।
সেই ম্যাচে খেলতে মেসির দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার বিকল্প নেই।
আমারবাঙলা/জিজি