নিজস্ব প্রতিবেদক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাণিজ্য খাতকে আরও কার্যকরী করতে ট্যাক্স জিডিপি বাড়ানো, দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। এজন্য বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সহজীকরণের পাশাপাশি ট্যাক্স জিডিপি বাড়াতে কর কাঠামো পুনর্গঠন ও ব্যবসাবান্ধব করা এবং কর আহরণ প্রক্রিয়া সহজীকরণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বিল্ডিং এ রেজিলিয়েন্ট ইকোনমি ফর ভিশন ২০৪১: কি চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক কর্মশালায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যতম একটি করণীয় ও চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করা। আর এ বিনিয়োগের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ ও সহজিকরণ অত্যন্ত জরুরি। কোভিড সংকট পরবর্তী পরিস্থিতি, বর্তমান বিশ্ব ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংগঠিত যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এরূপ পরিস্থিতিতে রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী রেসিলিয়েন্ট ইকোনমি অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক খাতকে সুসংগঠিত করতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, আর্থিক কার্যক্রমকে স্মার্টভাবে পরিচালনার জন্য সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেশকিছু করণীয় ও চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করেন মাহবুবুল আলম। তার মধ্যে রয়েছে ট্যাক্স জিডিপি বাড়াতে কর কাঠামো পুনর্গঠন ও ব্যবসাবান্ধব করা এবং কর আহরণ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সহজিকরণ করা, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নীতিমালা প্রণয়ন, শ্রমঘন শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে আর্থিক ও নীতিগত সুবিধা বৃদ্ধি করা, উন্নয়নের রোডম্যাপ বাস্তবায়নে শক্তিশালী মনিটরিং সেল গঠন করা, লজিস্টিক খাতের নীতিমালা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা ও কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ করা ইত্যাদি।
কর্মশালার প্রধান অতিথি বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, আমাদের বিরাট বাজার আছে, সক্ষমতা আছে, অনেক জটিলতার মধ্য দিয়েও আমার আজকে এতদূর পর্যন্ত এসেছি। সবসময়ই যে বাইরের দেশের ফর্মুলায় চলতে হবে এমন নয়, নিজেদের সক্ষমতা বেড়েছে এখন বাংলাদেশের।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে সাত লাখ আইটি এক্সপার্ট দরকার হচ্ছে। কয়েক বছর পর হয়ত দশ লাখ দরকার হবে। কিন্তু দক্ষতার অভাবে আমরা পাঠাতে পারছি না। দক্ষ লোকবল না গড়ে উঠলে ভবিষ্যতে উচ্চপ্রযুক্তি ব্যবহারে বিদেশ থেকে লোক আনতে হবে বলেও আশঙ্কা করেন বাণিজ্য সচিব।
শিক্ষার মান বাড়ানো জরুরি উল্লেখ করে এনবিআরের সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, প্রতি বছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে যায় বিদেশিরা, অথচ দেশের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পাচ্ছে না।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিস এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইর প্যানেল উপদেষ্টা ড. মাশরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, ভিশন ২০৪১ অর্জনে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানো, সবুজায়ন বাড়ানো এবং সর্বোপরি বেসরকারি খাত বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন অপরিহার্য।
এছাড়া কর্মশালায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আক্তার ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান রহমান।
কর্মশালায় এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসেন, পরিচালক, বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতা ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            