সংগৃহীত
বাণিজ্য

সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাধারণত প্রতিবছর বাজেটের আকার বাড়ে। কিন্তু আগামী বাজেট হবে আগের বছরের মূল বাজেটের তুলনায় কিছু কম। অর্থবছর ঘুরলেই যে ৫০, ৬০, ৮০ হাজার বা এক লাখ কোটি টাকা বাড়িয়ে নতুন বাজেটের ঘোষণা দিয়ে আসছিল আওয়ামী লীগ সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার আর তা করছে না।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার কমাতে যাচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বাজেটের আকার হবে প্রায় সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেট ছিল সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

অন্তর্বর্তী সরকার নতুন অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য ছয় শতাংশ উচ্চাভিলাষী জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রাথমিক পরিকল্পনা থেকে সরতে পারে।

আগামী অর্থবছরে জিডিপি হতে পারে সাড়ে পাঁচ শতাংশ। বিদেশি ঋণদাতারা জিডিপি কমানোর পর সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন, গত সপ্তাহে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) পূর্বাভাস দিয়েছিল যে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে পাঁচ দশমিক এক শতাংশ।

মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে রাজস্ব সমন্বয় পরিষদের বৈঠকে নতুন জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা, মূল্যস্ফীতি ও আগামী বাজেটের আকার নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা যায়, আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনাই সরকারের মূল লক্ষ্য।

এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যেই আমরা জিডিপির হার কম রাখছি।

আসন্ন বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ছয় শতাংশ নির্ধারণ করবে। এডিবি আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি আট শতাংশের আশেপাশে থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।

চলতি অর্থবছরে সরকার মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে আট শতাংশ। এডিবির প্রাক্কলন ছিল ১০ দশমিক দুই শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, মার্চে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল নয় দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর আগের মাসে ছিল নয় দশমিক ৩২ শতাংশ।

বাজেট ঘাটতি কমাতে অর্থনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে বাজেট ছোট রাখা হচ্ছে।

চলমান অর্থনৈতিক মন্দার ফলে রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় ঘাটতি বাড়লে সরকারকে স্থানীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে। এটি মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে।

আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি দুই লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার নিচে থাকলে সাড়ে ছয় শতাংশ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি এমনটি থাকবে বলে মনে করছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

মোট বরাদ্দের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার হবে দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। পরে সংশোধন করে দুই লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়।

বাজেটের সিংহভাগ অর্থের জোগান দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী অর্থবছরে সংস্থাটির জন্য পাঁচ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। চলতি বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে চার লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব আদায় হয়েছে দুই লাখ ২১ হাজার ৮১৭ টাকা। কিন্তু আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব ঘাটতি ৫৮ হাজার কোটি টাকা অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ শতাংশ কম। রাজস্ব আদায় খুব বেশি বৃদ্ধি না পাওয়ায় বিগত বছরগুলোর মতো বাজেটের আকার বাড়াতে পারছে না সরকার।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন কিছুদিন আগে বলেছিলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা দক্ষিণ এশিয়ার গড়ের তুলনায় বাংলাদেশে ছয় শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি যে কোনো অবস্থায় অনেক বেশি।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এর আগে বলেছিলেন, নানা কারণে আগামী বাজেট ছোট করতে হচ্ছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকারও ছোট হবে। নতুন করে বড় কোনো প্রকল্প নেওয়া হবে না। তবে যেসব বড় প্রকল্প আছে, সেগুলোতে অর্থায়ন চলমান থাকবে।

জাতীয় সংসদ না থাকায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী বাজেট উপস্থাপন করবেন টেলিভিশনের পর্দায়। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে এ বাজেট ঘোষণা করা হবে। প্রচলিত বিধান অনুযায়ী, রাজনৈতিক সরকারের অর্থমন্ত্রীরা সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেন। রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না থাকায় এ বছর সেটি হবে না।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করা হবে। সর্বশেষ ২০০৭-০৮ সালে টেলিভিশনে ভাষণের মাধ্যমে দুটি বাজেট ঘোষণা করেছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

অধিনায়ক হিসেবে সাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন মিরাজ

বাংলাদেশের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের কাঁধে এখন বড় দায়িত্ব।...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা সদস্য সচিবের পদত্যাগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরার সদস্য সচিব সুহাইল মাহদীন ওরফে সাদী পদত্...

ইরান থেকে ফিরেছেন ২৮ বাংলাদেশি

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের সময় ইরানে আটকা পড়া ২৮ বাংলাদেশি দেশে পৌঁছেছেন। মঙ্গলব...

মুরাদনগরকাণ্ডে নতুন মোড়, মামলা চালাতে চান ভুক্তভোগী নারী

কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ডে আলোচিত সেই নারী নিজের আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন...

আমরা এক থাকলে আমাদের সামনে কিছুই টিকতে পারবে না : ফারুকী

‌‘জুলাই স্মরণ’ কর্মসূচির প্রশংসা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরক...

অধিনায়ক হিসেবে সাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন মিরাজ

বাংলাদেশের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের কাঁধে এখন বড় দায়িত্ব।...

একটি অপূর্ণতা আমাকে এখনো কষ্ট দেয় : সৈয়দ আব্দুল হাদী

সৈয়দ আব্দুল হাদী, দেশের কিংবদন্তির সংগীতশিল্পী। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে উপহার দিয়...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোরের আহ্বায়কের পদত্যাগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা সদস্য সচিবের পদত্যাগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরার সদস্য সচিব সুহাইল মাহদীন ওরফে সাদী পদত্...

মুরাদনগরকাণ্ডে নতুন মোড়, মামলা চালাতে চান ভুক্তভোগী নারী

কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ডে আলোচিত সেই নারী নিজের আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা