গাজায় আগ্রাসন চলছে ৪৫১ দিন ধরে। এই সময়ে অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন সাড়ে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ। আর নিহতদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু। নিহত হওয়া ছাড়াও ইসরায়েলি হামলার কারণে এখনো বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নিখোঁজ হয়ে আছেন ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি ও লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে— বিগত ৪৫০ দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৫৪১ জন। এই সময়ে আহত হয়েছেন আরো অন্তত এক লাখ আট হাজার ৩৩৮ জন। নিহতদের মধ্যে শিশু ১৮ হাজার ৮৫৮ জন এবং নারী ১১ হাজার ৯৪৬ জন।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবের বরাত দিয়ে মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন কেবল মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়নি, সেখানকার মানুষের শেষ আশ্রয় এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গও কেড়ে নিয়েছে। ইসরায়েলি হামলা গাজাকে স্রেফ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এসব ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১১ হাজারের বেশি মানুষ চাপা পড়ে গেছেন। এই সংখ্যাকে নিখোঁজ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে অঞ্চলটির অবকাঠামোর কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে—গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস থেকে প্রকাশিত পরিসংখ্যান ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পরে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাতে ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে এক লাখ ১০ হাজার তাঁবু নষ্ট হয়ে গেছে এবং আর ব্যবহারের উপযোগী নয়।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার ১৩৫টি স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস এবং ৩৫৩টি স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৫৬ জন শিক্ষক ও শিক্ষা-কর্মী নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ের ১৪৮ জন স্কলার, শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ও গবেষক নিহত হয়েছেন ইসরায়েলি হামলায়।
এ ছাড়া, ইসরায়েলের নির্বিচার আগ্রাসনে গাজার ৮২৩টি মসজিদ ধ্বংস এবং ১৫৮টি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চার্চ ধ্বংস হয়েছে তিনটি। ৬০টি কবরস্থানের ১৯টিই পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস হয়েছে। পাশাপাশি দুই হাজার ৩০০ জনের মরদেহ ইসরায়েলিরা কবরস্থান থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে।
আবাসিক এলাকায়ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল। দখলদার বাহিনীর হামলায় গাজায় এক লাখ ৬১ হাজার ৬০০টি আবাসিক ইউনিট ধ্বংস হয়েছে এবং ৮২ হাজার আবাসিক ইউনিট বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর বাইরে, গাজার ৩৪টি হাসপাতাল ব্যবহার অনুপযোগী এবং ৮০টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে ইসরায়েলি হামলার কারণে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            