শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদের গুলিতে চারজন আহত হয়েছেন। এ সময় স্থানীয় লোকদের গণপিটুনিতে দুই ডাকাত নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ শ্রমিকদের ও গুরুতর আহত পাঁচ ডাকাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় মাদারীপুরের কালকিনি ও রাত ১১টার দিকে শরীয়তপুরের ডোমসার ইউনিয়নের তেতুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একদল ডাকাত মাদারীপুরের কালকিনির রাজারচর এলাকায় একটি বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাদের ধাওয়া দেন। তখন ডাকাতরা ফাঁকা গুলি ছুড়লে গুলিতে বাল্কহেডের শ্রমিক পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার মাসুম মিয়া (৩০) ও পিরোজপুরের কালিকাঠীর আলামিন ফকির (১৯) গুলিবিদ্ধ হন। পরে ডাকাতরা পালিয়ে শরীয়তপুরের আঙ্গারিয়ার ভাষাণনচর এলাকায় ঢুকে পড়ে। এরই মধ্যে ডাকাতির খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা সতর্ক হয়ে যান। পরে ডাকাতরা আবার কীর্তিনাশা নদী দিয়ে পালানোর সময় রাজগঞ্জ এলাকা দিয়ে নদীপথে বের হওয়ার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয় লোকজন বাল্কহেড দিয়ে ডোমসার এলাকার তেতুলিয়া গ্রামের নদীপথ আটকে দেন। বাধা পেয়ে ডাকাতরা স্পিডবোট তীরে রেখে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করেন। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা বিস্ফোরণসহ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে বাল্কহেডের শ্রমিক ডোমসার মোল্লা কান্দি এলাকার তোতা মিয়া (৩৫) ও স্থানীয় একজন আহত হন।
পরে স্থানীয় লোকজন মুন্সিগঞ্জের কালীচর থানার রিপন (৪০), শরীয়তপুরের জাজিরার কুন্ডের চরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুরের সজীব (৩০), অজ্ঞাত আরো চারজনসহ সাতজন ডাকাতকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে অজ্ঞাত দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক ওই ঘটনার পরে গুলিবিদ্ধ তিন শ্রমিকসহ বাকি পাঁচ ডাকাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠান।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মুনতাসির খান বলেন, ডাকাতদের গুলিতে আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। বাকি তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সাতজন আহত ডাকাতের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন। বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুরের কালকিনির রাজারচরে বাল্কহেডে ডাকাতির সময় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তিনজন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। খবর পেয়ে আমাদের সদর থানা টিম বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। এরই মধ্যে ডাকাতরা স্পিডবোটে পালানোর চেষ্টা করে এবং আঙ্গারিয়া হয়ে শরীয়তপুরের ভেতরে ঢুকে যায়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে গণধোলাই দেন। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত সেনাবাহিনী ও পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং সাতজন ডাকাতকে জনগণের কাছ থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। ঘটনাস্থল থেকে একটি স্পিডবোট ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ করেছি। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            