নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য cccর বিকল্প কিছু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ইসলামিক জোট ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে লিবারেল ইসলামিক জোটের উদ্যোগে ‘বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতা ও সংকট নিরসনে করণীয় শীর্ষক' গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, কেউ যদি শর্ত দিয়ে সংলাপে বসতে চায় তাহলে সেটা ঠিক হবে না। তাকে শর্ত ছাড়া সংলাপে বসতে হবে। সবাই মিলে ঠিক করতে হবে কি করলে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। সুস্থ ধারার রাজনীতি করতে চাইলে আমাদের সুস্থ চিন্তা করতে হবে। তাছাড়া জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের কাজ করা উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান বাংলাদেশ একটা বিশেষ সময় পার করছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংলাপের বিকল্প কিছু হতে পারে না। আর এভাবে যদি সহিংসতা চলতে থাকে তাহলে অরাজকতা দিন দিন বারতে থাকবে। তাই আমাদের সমস্যাগুলো আমাদেরই সমাধান করতে হবে। এখানে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর উদ্বেগ থাকতে পারে কিন্তু সমস্যা আমাদেরই করতে হবে।
বিরোধী দলের অবরোধের কারণে বাজারে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলো যারা অবরোধ করছে তাদের কারণে বাজার সিন্ডিকেটরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাহলে এই অবরোধ কি জনগণের পক্ষে গেল? তাই মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নাগালের মধ্যে আনতে হলে এই ধরনের কর্মসূচি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। জনগণের পক্ষে থেকে কাজ করতে হবে।
এর আগে সভায় শিক্ষাবিদ নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ, লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক পার্টির চেয়ারম্যান ফারাহনাজ হক চৌধুরীসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
বৈঠকে ছোট দলগুলো যেন অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেজন্য নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা শেষ হবার আগে কিছু নির্বাচনী সংস্কার করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষাবিদ নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা আটক অবস্থায় আছেন। তাদের সাথে সংলাপ করতে হলে ভার্চুয়ালি করতে হবে। যা সম্ভব নয় আক্ষরিক অর্থে। পাশাপাশি আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে সব নির্বাচনী কার্যক্রম শেষ করতে হবে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন। তবে তাদের ক্ষমতা শেষ হবার আগে কিছু সংস্কার করতে হবে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর আমাদের যে নির্বাচন হয় তার সংস্কার করতে হবে। যার মাধ্যমে ছোট ছোট দলগুলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে আসতে পারবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান ও লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, সহিংসতা এবং বিভক্তি দেশের মানুষের মধ্যে একধরনের আতংক সৃষ্টি করছে। তাই আমরা ইসলামি দলগুলো একটি জোট তৈরি করতে চেয়েছি। যাতে করে দেশের মানুষের সংকটগুলো আলোচনার মাধ্যমে শেষ করা যায়। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনের পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা নির্বাচনে যাব। তবে ১৪ এবং ১৮ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। আমরা এই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেখতে চাই না। পাশাপাশি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীই কিন্তু নির্বাচন ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য আন্দোলন করেছিল। কিন্তু ১৫ বছরে ক্ষমতায় থেকে ভোট প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্বাস করি না। তবে নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হওয়াতে বিশ্বাস করি। তবে নির্বাচন কমিশন হতে হবে মেরুদণ্ড ওয়ালা লোক। এই মেরুদণ্ড ওয়ালা লোক সার্চ কমিটির মাধ্যমে খুঁজে বের করার দরকার ছিল, কিন্তু তা হয়নি।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য লিবারেল ইসলামী জোটের ৩০০ প্রার্থী প্রস্তুত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, খালি মাঠে আমরা গোল দিতে চাই না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। আমরা কেয়ারটেকার পদ্ধতি সমর্থন করি না। কিন্তু একক ভাবে ক্ষমতায় থাকাও বিশ্বাস করিনা। নৌকার নির্বাচনী মার্কা পেলেই পাশ, এই মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
বর্তমান সংকট থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সকলে মিলে বসে কাজ করার আহ্বান জানান কৃষক শ্রমিক পার্টির চেয়ারম্যান ফারাহনাজ হক চৌধুরী। তিনি বলেন, সকল রাজনৈতিক দল গুলোকে আলোচনা করতে হবে। আর আলোচনা প্রতি সপ্তাহেই হতে হবে। বর্তমানে ঘর থেকে বের হতে গেলে সবাই চিন্তা করে সে ঠিকমত ঘরে ফিরে আসতে পারবে কি না। তাই এই আতংকে দেশের কোন মানুষ থাকতে চায় না। তাই আগামী নির্বাচন যাতে সুন্দর হয় সে দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আশিক্বীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান আলম নুরী আল সুরেশ্বরী, বাংলাদেশ জনদল (বিজেডি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী) চেয়ারম্যান হাসরত খান ভাসানী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক আকন্দ, মাওলানা রুহুল আমিন ভুঁইয়া, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ সরকার, বাংলাদেশ জনদল (বিজডি)র ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, কৃষক শ্রমিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সেলিম চৌধুরী, বিজেডি মহাসচিব সেলিম, আশিক্বীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদের মহাসচিব মাওলানা হানিফ নুরী, আহমদ, অ্যাডভোকেট শাহআলম অভি, মুফতি বোরহান উদ্দীন আজিজী, শায়খ আজমাইন আসরার, বিএসপি যুগ্ম মহাসচিব মো. আসলাম হোসাইন।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            