নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামীকাল (১লা এপ্রিল) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ ও স্নেহভাজন এবং রাজধানী ঢাকার রাজনীতির নন্দিত নায়ক মোহাম্মদ হানিফের ৮০তম জন্মবার্ষিকী।
তিনি ১৯৪৪ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আবদুল আজিজ এবং মাতা মুন্নি বেগমের কনিষ্ঠ সন্তান। ১৯৬৭ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকার প্রখ্যাত পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মাজেদ সরদারের কন্যা ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক পুত্র ও দুই কন্যার জনক। পুত্র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ঢাকা-৬ এর সংসদ সদস্য।
রোববার (৩১ মার্চ) ঢাকা-৬ এর সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম সুমন জানিয়েছেন, মোহাম্মদ হানিফের ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, মেয়র হানিফ স্মৃতি সংসদ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তার কর্মময় জীবনকে স্মরণ করে আজিমপুর কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত, শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া মাহফিল ও ‘অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ’ ইত্যাদিসহ নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, নন্দিত এই নেতার একমাত্র পুত্র বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ঢাকা-৬ এর সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণের প্রথম নির্বাচিত সফল মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পিতার জন্মবার্ষিকীতে দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন।
জীবনের শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল। তিনি ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এ সময় ছয়দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু তাঁর ঢাকা-১২ আসন ছেড়ে দেন এবং মোহাম্মদ হানিফ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে জাতীয় সংসদে হুইপেরও দায়িত্ব পালন করেন। ৭৬ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৪ সালে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে অবিভক্ত ঢাকার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। তারই নেতৃত্বে ৯৬-এর মার্চে ‘জনতার মঞ্চ’ গঠন করে ৯৬-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের বিজয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন মোহাম্মদ হানিফ। যা ছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট।
২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে তার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন মোহাম্মদ হানিফ। একের পর এক গ্রেনেডে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও মারাত্মক আহত হন তিনি। তার মস্তিষ্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য স্প্লিন্টার ঢুকে পড়ে। দুঃসহ যন্ত্রণা সহ্য করে মোহাম্মদ হানিফ ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে ৬২ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            