মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং মাদক ও অস্ত্র পাচার নিয়ে বির্তকের অভিযোগ উঠেছে।
এই প্রতিষ্ঠানের একসময় মালিক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কিন্তু ২০২২ সাল থেকে থাই ধনকুবের অ্যান জেকাফং জেকরাটাটিপ এবং তার কোম্পানি জে কে এন গ্লোবাল প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা কিনে নিয়েছে।
এর মধ্যে থাইল্যান্ডে প্রতারণার অভিযোগে মালিকদের একজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মেক্সিকোয় মাদক ও অস্ত্র পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।
থাইল্যান্ডে অ্যান জেকাফং জেকরাটাটিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জে কে এন গ্লোবালের একজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রায় ৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার নিয়ে আইনি বিরোধে জড়িয়েছেন। চলতি সপ্তাহে তিনি ব্যাংককের আদালতে হাজিরা দিতে ব্যর্থ হন। থাই গণমাধ্যম অনুসারে, ব্যাংকক সাউথ ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট বুধবার (২৬ নভেম্বর) জেকরাটাটিপের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, জেকরাটাটিপ ও জে কে এন গ্লোবাল ২০২৩ সাল থেকে বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে এবং কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছিল। কোম্পানিটি ২০২৪ সালে থাইল্যান্ডের দেউলিয়া আদালতে ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য আবেদন করে এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৯ কোটি ২৬ লাখ ডলার ঋণ রয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে থাইল্যান্ডের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) জেকরাটাটিপ ও জে কে এন গ্লোবালের বিরুদ্ধে আর্থিক বিবৃতিতে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করার অভিযোগ এনে তাদের প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ডলার জরিমানা করে।
এসইসি বিবৃতিতে বলেছে, জে কে এন গ্লোবাল বিনিয়োগকারীদের কাছে মেক্সিকোর ব্যবসায়ী রাউল রোচা ক্যান্টু ও তার কোম্পানি হেরিটেজ হোল্ডিং গ্রুপ ইউএসএ ইনকরপোরেটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে কিছুই প্রকাশ করেনি। ২০২৩ সালে করা ওই চুক্তি অনুযায়ী, জে কে এন গ্লোবাল রোচার প্রতিষ্ঠানের কাছে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার ৫০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছে।
এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসইসির জরিমানা ও আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর জেকরাটাটিপ প্রতিষ্ঠানটির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, তবে তিনি এখনো শেয়ারধারী। এদিকে, বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার প্রেসিডেন্ট রাউল রোচা ক্যান্টু মেক্সিকোতে আরেক আইনি জটিলতার মুখে পড়েছেন।
মেক্সিকোর প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, মেক্সিকো ও গুয়াতেমালার মধ্যে অস্ত্র, মাদক ও জ্বালানি পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এএফপি জানিয়েছে, এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে মামলায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, যদিও রোচা ক্যান্টুর নাম এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
সূত্র: আল জাজিরা
● আমারবাঙলা/এফএইচ