বাংলাদেশ থেকে পান রপ্তানি কঠিন হয়ে উঠছে। শুল্ক বিভাগ বলেছে, বাংলাদেশ পান রপ্তানিকারক সমিতির প্রত্যয়নপত্র ছাড়া ২০ ফেব্রুয়ারির পর কেউ পান রপ্তানি করতে পারবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টম হাউস গত সপ্তাহে এ–সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ পান রপ্তানিকারক সমিতির সদস্য ছাড়া কেউ পান রপ্তানি করতে পারবে না, এমন ব্যবস্থা নিতে এনবিআরকে অনুরোধ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পান রপ্তানিকারক সমিতির প্রত্যয়নপত্র ছাড়া কোনো রপ্তানিকারক যেন পান রপ্তানি করতে না পারে, এ জন্য কাস্টম হাউসকে অনুরোধ করে এনবিআর।
কাস্টম হাউসের এই নির্দেশনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফভিএপিইএ)। সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর রবিবার এনবিআর চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়ে নির্দেশনাটি বাতিলের অনুরোধ করেছেন। চিঠিতে বলা হয়, বিএফভিএপিইএর সদস্য ৪০০ প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাকসবজি, ফলমূল, পান একটি এয়ারওয়েজ বিল ও একটি শিপমেন্টের মাধ্যমে রপ্তানি করে। কখনো শাকসবজি, ফলমূল, পানসহ কৃষিপণ্য রপ্তানিতে পৃথক কোনো শিপমেন্ট করা হয়নি। বর্তমান নির্দেশনা রপ্তানির বাজার ধ্বংসের শামিল।
জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি পান রপ্তানি করা হয়। এর বাইরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পান রপ্তানি করা হয়। তবে যুক্তরাজ্যে পান রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ পান রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, আইন অনুযায়ী কোনো পণ্য রপ্তানি করতে হলে সংশ্লিষ্ট সমিতির সদস্যপদ থাকতে হয়।
নতুন সিদ্ধান্তে রপ্তানি কমবে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রতি কেজি পানের প্রকৃত রপ্তানি মূল্য পাঁচ ডলার। সবজির গড় রপ্তানি মূল্য এক ডলার। ফলে সবজির আড়ালে পান রপ্তানির হচ্ছে। এখন এটি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা ইতোমধ্যে বলে দিয়েছি, পাঁচ ডলারের কমে পান রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে না।
জানা যায়, বাংলাদেশ পান রপ্তানিকারক সমিতি ২০০২ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিবন্ধন পায়। পরে সংক্ষুব্ধ হয়ে এই সমিতির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট মামলা করে বিএফভিএপিইএ। ২০০৫ সালে সেই সমিতির নিবন্ধন বাতিল হয়। তখন পুনরায় আবেদন করে সদস্যপদ পায় বাংলদেশ পান রপ্তানিকারক সমিতি। আবার রিট করে বিএফভিএপিইএ। সেই রিটের নিষ্পত্তি হয় ২০২৩ সালে, সমিতির পক্ষে রায় দেন উচ্চ আদালত।
বিএফভিএপিইএর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর বলেন, ৩০–৪০ বছর ধরে সবজির পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠান পান রপ্তানি করে। আবার বিদেশের যেসব ক্রেতা প্রতিষ্ঠান সবজি কিনছে, তারাই পান কিনছে। ফলে পান রপ্তানির জন্য একটি সমিতির সদস্যপদ বা প্রত্যয়নপত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হলে রপ্তানি ব্যয় বাড়বে। এতে রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে। এই সিদ্ধান্তে পান সমিতির আয় বৃদ্ধি ছাড়া অন্য কারো কোনো উপকার হবে না।
তিনি আরো বলেন, সবজি বা পান রপ্তানিকারকদের মুনাফা হচ্ছে রপ্তানির বিপরীতে সরকারের নগদ সহায়তা। ফলে কম দামে পান রপ্তানি করে রপ্তানিকারকদের কোনো লাভ নেই।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            