একসময় শিশুশিক্ষার হাতেখড়িতে তালপাতা, বাঁশের কঞ্চি আর কয়লার কালি ছিল অবিচ্ছেদ্য অংশ। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এসেও সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন বাগেরহাটের চিতলমারীর কালিপদ বিশ্বাস। বয়স ৮২ পেরিয়েছে, তবু তালপাতায় অ,আ,ক,খ শেখান গ্রামের শিশুদের।
চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া দক্ষিণ পাড়ায় অবস্থিত তাঁর পাঠশালার নাম—‘ডুমুরিয়া দক্ষিণ পাড়া শিশুবিদ্যা নিকেতন’। ২১ বছর ধরে তিনি তালপাতার পাঠশালায় শিশুদের হাতে অক্ষরের জ্ঞান তুলে দিচ্ছেন।
প্রতিদিন হাজিরা দেন গড়ে ৩০ জন শিশু। বিনা পারিশ্রমিকে তাদের পড়ান কালিপদ বিশ্বাস, যিনি স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘পণ্ডিত মহাশয়’ নামে। অভিভাবকরা সামান্য যা দেন, তা-ই গ্রহণ করেন। আয় রোজগারের ভরসা বলতে নিজের মাছের ঘের ও ছেলেমেয়েদের সহযোগিতা।
তাঁর মতে, “তালপাতায় হাতের লেখা পরিস্কার হয়, শিশুদের শেখার আগ্রহ বাড়ে। আমাদের সময়ও তো তাই শিখতাম।”
অভিভাবকদের ভাষ্য, তালপাতার লেখায় শিশুদের অক্ষরজ্ঞান মজবুত হয়, ধৈর্য বাড়ে। প্রতিদিন ১২টি তালপাতায় লেখা দেখাতে হয়। বছর শেষে পরীক্ষা দিয়ে তারা শিশু ওয়ানে ওঠে।
কালিপদ বিশ্বাস আজও শিশুশিক্ষায় এক অনন্য অনুপ্রেরণা। তাঁর মতো নিবেদিত মানুষের হাতে শিক্ষার আলো পায় গ্রামের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
আমার বাঙলা/এফ এইচ