মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় সহকারী শিক্ষকদের ব্ল্যাকবোর্ডে উত্তর লিখে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ফাঁস হয়েছে। এছাড়াও একই বিদ্যালয়ে অভিবাবকরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করে ভিডিও করে ছড়িয়ে দিয়েছেন অন্য আরেক সচেতন অভিবাবক।
এতে প্রাথমিকের শিক্ষার মান ও শিক্ষকদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবক ও সচেতন মহল। মঙ্গলবার (১৩ মে) থেকে উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার প্রথম দিন থেকে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের চম্পকতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর বোর্ডে লিখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি অভিবাবকরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বুধবার তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে ব্ল্যাকবোর্ডে প্রশ্নের উত্তর লিখে দিচ্ছেন ও মুখ দিয়ে বলে দিচ্ছেন এমন একটি ভিডিও একই বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক করেন। এ সময় পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীর পাশে বসে পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখে দিতেও এক অভিবাবককে দেখা যায়।
বোর্ড থেকে শিক্ষার্থীরা দেখে দেখে ও শুনে উত্তরপত্রে লিখছে। এমন ভিডিও করার সময় ওই অভিবাবক শিক্ষককে বোর্ডে উত্তর লেখার বিষয়ে প্রশ্ন করলে দায়িত্বরত শিক্ষক জানান, যে সব শিক্ষার্থীরা পারে না শুধু তাদের জন্যই বোর্ডে লেখা হয়েছে। পরে তড়িঘড়ি করে ব্ল্যাকবোর্ড মুছে পরিষ্কার করেন জড়িত শিক্ষকরা।
স্থানীয় এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো হয় পড়াশোনা শেখানোর জন্য কিন্তু শিক্ষকরা যদি নিজেরাই পরীক্ষার সময় উত্তর লিখে দেন, তাহলে শিশুদের শেখার সুযোগ কোথায় ?
এ বিষয়ে চম্পকলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সূধন সূত্রধর বলেন, আমি অসুস্থ তাই অফিসে বসা ছিলাম। ব্লাকবোর্ডে যে শিক্ষক লিখে দিয়েছেন তিনি ভুল করেছেন। এ সময় তিনি শিক্ষক হিসেবে এই কাজ করা কতটা যৌক্তিক ও নৈতিক এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে জুড়ী উপজেলা শিক্ষা অফিসার দীলিপময় দাশ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। প্রাথমিক তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মনিটরিং জোরদার করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাবলু সূত্রধর বলেন, ‘এমন ঘটনা মোটেও প্রত্যাশিত নয়। শিক্ষার মানোন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন সর্বদা সজাগ আছে। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমারবাঙলা/ইউকে
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            