বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইবি শাখা ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব এন এস (আইইউসানস)-এর আহ্বানে বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘গুলিবিদ্ধ আমার ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি’, ’ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘গুলি খেয়েছে আমার ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’, ‘সন্ত্রাসীরা দেখে যা, রাজপথে তোর বাপেরা’সহ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, “হাদির উপর হামলা শুধু একজন ব্যক্তির উপর হামলা নয়। এটি ন্যায্য মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর হামলা। মতের অমিল থাকার কারণে হামলা করা কোনো সভ্য সমাজ মেনে নেয় না। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। ওসমান হাদি একজন ন্যায়, সৎ, বিপ্লবী ও সচেতন একজন ব্যক্তি।”
তিনি আরও বলেন, ”আপনারা এ হামলার পর অন্তত তারেক রহমানের দেশে না আসার কারণ বুঝতে পেরেছেন। একটি চক্র এভাবেই সর্বদা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
ইবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, ”একটি চক্র জুলাইকে একাত্তরের মুখোমুখি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা বলে দিতে চাই, জুলাইকে একাত্তরের মুখোমুখি করবেন না। এসব সুশীলদের বলতে চাই, আপনারা সাবধান না হলে আপনাদেরকেও বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করতে বাধ্য হবো। ভারত যে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে তারা যদি প্রতিবেশীর মত না থাকে তাহলে তাদেরকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিব।”
তিনি আরও বলেন, ”যেখানেই জুলাইকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ইবিতে যেসব ফ্যাসিস্ট রয়েছে তারাও ষড়যন্ত্রের চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা বলে দিতে চাই, আপনারা যদি আর ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করেন তাহলে আপনাদের পিঠের চামড়া তুলে নিতে বাধ্য হবো। টেনে হিচড়ে জেলে পাঠাতে বাধ্য হবো।”
গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, “অনেকেই গণভোটের বিপক্ষে কথা বলছে। গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে আরও অনেকেরই ওসমান হাদির মতো অবস্থা হবে।”
ইবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এস এম সুইট বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলা আজকে শুরু হয়নি। এটি শুরু হয়েছে ইন্টেরিম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই। এর আগে চট্টগ্রাম ও বরিশালে জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলা চালাচ্ছে আওয়ামীলীগ, তাদের সহযোগী ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। ভারতের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, গত ১৫ বছরের মত আর কর্তৃত্ব দেখানোর দিবাস্বপ্ন দেখবেন না। ২৪-এ যেমন আপনাদের রুখে দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশপন্থীরা আপনাদের রুখে দিবে।”
তিনি দুই দাবি উল্লেখ করে বলেন, ”শুধু আওয়ামীলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করলেই হবে না, আওয়ামীলীগকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং নির্বাচন পর্যন্ত ভারতের সাথে সবধরনের কুটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ রাখতে হবে।”
সমাবেশ শেষে ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় সম্মিলিত মোনাজাতের মাধ্যমে দোয়া করা হয়।
প্রসঙ্গত, আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় দুর্বৃত্তরা হাদিকে গুলি করে পালায়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আমার বাঙলা/আরএ