নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্যায়ভাবে বা বিনা পরোয়ানায় কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, গত ২৮ নভেম্বর বিএনপির সমাবেশে উচ্চ প্রযুক্তির ড্রোন ক্যামেরা ওড়ানো হয়েছিল। ড্রোনের সাহায্যে সেখানে কখন কতজন লোক উপস্থিত ছিল, আমরা সেটা বের করেছি।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির মানববন্ধনে বক্তারা জানিয়েছেন, সরকার বাংলাদেশকে খুন ও গুমের দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিত করেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে কতটুকু খোঁজ-খবর রাখেন, সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। বাংলাদেশ এখন একটি শান্তিপূর্ণ দেশ।
এখানে সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চরমপন্থি, বনদস্যু ও জলদস্যু ক্রমান্বয়ে সারেন্ডার করেছে, বিদায় নিয়েছে। খুন-গুমের কথা যদি বলতে হয়, ২০০৪-এ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি ছিল, এক বছরে সেখানে ৪৭০ জনের কাছাকাছি গুম হয়েছিল। তাদের প্রতি বছর প্রতিনিয়ত গুম-খুন হতো।
তিনি বলেন, আমরা এখন খুন-গুম সচরাচর দেখছি না। এগুলো আমরা ব্যাপকহারে দেখেছিলাম ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত।
আমরা জঙ্গি-সন্ত্রাসের উত্থান দেখেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্যটা আপনারা দেখেছেন। খোদা তাকে রক্ষা করেছেন। ৬৩টি জেলায় এক সাথে বোমা হামলা হয়েছিল। এসব কিন্তু সেই আমলেই হয়েছে। এগুলো একটা ইতিহাস হয়ে রয়েছে।
এখন এগুলো করে যারা স্বপ্নে দেখছেন, একটা বিভ্রান্তি ছড়াবে। তারা একটা দুঃস্বপ্ন দেখছেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, সেই খুন-গুমের কথা হয়তো অনেকেই ভুলে গেছেন। আমি আবারও তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, খুন-গুমের শুরুই করেছিলেন তারা। আমরা এগুলো বন্ধ করে একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছি।
অবৈধভাবে বিরোধীদলকে গ্রেফতার করে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করছে সরকার- বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ২ বছর ধরে বিএনপি-জামায়াত বা অন্য দল যত ধরনের প্রোগ্রাম করতে চেয়েছে, আমরা কোনোটাতেই বাধা দেইনি।
তারা মানববন্ধন, মিছিল, লংমার্চ, অবরোধ, ধর্মঘট করেছে। গত ২৮ অক্টোবরও আমরা বাধা দেইনি।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এগুলো যারা করেন, তারা আবার মানবাধিকারের কথা বলেন। তাদের রাজনীতি করতে দেওয়া হয় না- এসব কথা বলেন।
সেখানে কারা কাকে পিটিয়েছে, তারা কোথা থেকে আসছে, সবকিছু আমাদের ক্যামেরায় রয়ে গেছে। ক্যামেরা থেকে খুঁজে কারা জড়িত ছিল, তা বের করা হয়েছে। যে যেখানেই থাকুক, সে যদি সাতক্ষীরা থেকে এসে থাকে, আমরা সাতক্ষীরায় তাদের চেহারা পাঠিয়ে দিয়েছি। তাকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
প্রায় ২ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটিয়েছিল, আমরা মাথাগুনে দেখেছি। আরও ছোট ছোট দল এখানে সমাবেশ করেছিল। ড্রোনের মাধ্যমে সবার চেহারায় আমাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
বিএনপির মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ অন্য জায়গায় গিয়ে মানববন্ধন করার অনুরোধ জানিয়েছিল। যানজট সৃষ্টি হতে পারে, সেজন্যই অন্য জায়গায় করতে বলেছিল। সেই জায়গায় তারা যায়নি। করতে দেয়নি, এটা সত্যি নয়।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকায় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের যদি আপত্তি থাকে, তবে তারা করতে পারবে না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যদি মনে করে এখানেই হলে পরিবেশ নষ্ট হবে, সেখানে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর দেখার বিষয় রয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে। সেগুলো দেখে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের মাধ্যমে তাদের বদলি করা হবে।
এ মুহূর্তে পুলিশের প্রতি আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশনা দিচ্ছে, সেটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন যেভাবে চাচ্ছে, পুলিশ সেভাবেই কাজ করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবে নির্বাচন কমিশন- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে চিঠি আগে আসুক। নির্বাচন কমিশন স্টাডি করে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একটা সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। সে সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে না এলে আমরা অ্যাডভান্স কিছু বলতে পারি না।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            