সংগৃহীত
রাজনীতি

সরকার দেশ নিয়ে বাজি ধরেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এই সরকার এভাবে নির্বাচন করতে পারলে, আপনি আমি কিছু বলি আর না বলি, জনগণ কিছু বলুক আর না বলুক, পশ্চিমা বিশ্ব কিছু বলবে। এই সরকার এভাবে আমার আপনার পেটে যে লাথি মারছে তা না, তারা পুরো দেশ নিয়ে বাজি ধরছে।

তিনি বলেন, আজকে আমেরিকা শ্রম অধিকারের নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে, এই ধরনের একতরফা নির্বাচন, মানবাধিকার, শ্রমিকের অধিকার খর্ব হলে, তারা আমাদের রপ্তানি খাত গার্মেন্ট শিল্পের ওপর নতুন নতুন বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারে। লাখ লাখ শ্রমিকরা যে শিল্প গড়ে তুলেছে, দেশপ্রেমিক উদ্যোক্তারা যে শিল্প গড়ে তুলেছেন, এই সরকার ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার ধ্বংস করছে। সরকারের এই তৎপরতাকে কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না। কারণ তারা সফল হলে এ দেশে, দেশের মানুষ, শ্রমিকরা ধ্বংস হবে। কাজেই আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ (এসএসপি) আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

শ্রমিক হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ, কর্মচ্যুতদের পুনর্বহাল, গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি, গার্মেন্টস শিল্প ঘোষিত মজুরি প্রস্তাব প্রত্যাহার এবং ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা পুনর্নির্ধারণের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

জোনায়েদ সাকি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা পাঁচ বছরে মজুরির দাবিতে একবার আন্দোলন করে। আইনেই বলা আছে, পাঁচ বছর পর পর মজুরি সমন্বয় করবে। সেই কারণে আমরা দেখেছি পাঁচ বছরে একবার আন্দোলন দানা বাঁধে। জিনিসপত্রের দাম কীভাবে করোনাকালে এবং পরবর্তী সময়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লো আমরা সবাই জানি। সরকার এই বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্যদের জন্য নানান ব্যাবস্থা করেছে। অন্যদের জন্য তো ব্যবস্থার দরকার নেই। এই দেশের যারা আমলা-কামলা, রাষ্ট্রের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সুযোগ-সুবিধার কোনো অভাব এই সরকার রাখেনি। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যতভাবে তাদের খুশি করা যায়, যতভাবে দুর্নীতি করা যায়, শত শত হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা যায় সব ব্যবস্থা তারা (সরকার) করেছে। শ্রমিকদের পেটে যে ভাত আসছে না, তাদের পেটে যে আগুন জ্বলছে তার ব্যবস্থা তারা (সরকার) করেনি।

তিনি বলেন, করোনা গেল, তারপর এলো ইউক্রেন যুদ্ধ। জিনিসপত্রের দাম কেন বাড়ে, তারা (সরকার) বললেন আন্তর্জাতিক বাজারের কারণে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে শ্রমিক খাবে কি করে? তাদের মজুরি বাড়ান। কিন্তু মজুরি বাড়ানোর কোনো নাম নেই। তারপর ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করা হলো। টাকার দাম কমে যাওয়ায় গার্মেন্টস মালিকদের লাভ হয়েছে এক লাখ কোটি টাকা। মালিকরা এই লাভ পেলেও শ্রমিকরা যে বাজারে যেতে পারছেন না, সেটার কোনো ব্যবস্থা নেই।

পাঁচ বছর পর একবার মজুরি সমন্বয় হবে, সেটার জন্য বসে আছেন তারা। কবে পাঁচ বছর হবে, তারপর শ্রমিকের পেটে ভাত যাবে। এর আগে শ্রমিকদের খেতে হয় না। সেই শ্রমিকরা পাঁচ বছর পর যখন রাস্তায় নামলো, তখন মালিকরা বলে বেতন দেবে ১০ হাজার ৪০০ টাকা। এই হচ্ছে আমাদের মালিকরা। তার প্রতিবাদে শ্রমিকরা যখন রাস্তায় নামলো, এই সরকার শ্রমিকের বুকে গুলি করে তাদের হত্যা করেছে।

তিনি আরও বলেন, শ্রমিক হত্যার বিচার, ক্ষতিপূরণ দেওয়া তো দূরের কথা, বরং যারা এই আন্দোলন সংগঠিত করতে ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরকে তারা (সরকার) গ্রেপ্তার করে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় দিয়ে দিয়েছে। শত শত শ্রমিককে তারা গ্রেপ্তার করেছে। এই শ্রমিকের ট্যাক্সের পয়সায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির বেতন হয়। আর শ্রমিক এলাকায় র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ঢুকিয়ে দিয়ে শ্রমিকদের বুকে গুলি করে। তাদের শত শত শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে। নিজেদের (সরকার) এজেন্ডা বাস্তবায়নে কারখানা ভাঙচুর করে শ্রমিকদের উপর দায় চাপায়। তারপর তাদের গ্রেপ্তার করে। আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত না করলে, আন্দোলন দমন করা যায় না।

বিএনপির মহাসমাবেশকেও পরিকল্পিতভাবে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, আমরা দেখলাম ২৮ তারিখে বিএনপির সমাবেশে কারা পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা তৈরি করল, আর পুরো দোষ চাপিয়ে দিল বিরোধী দলের ওপরে। একইভাবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলনেও আমরা দেখেছি, কীভাবে কারখানা ভাঙচুর করছে কতিপয় এজেন্টরা। তারা বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের কাজে লাগাচ্ছে, আর পুরো শ্রমিকদের ওপর দোষ চাপিয়ে প্লাটুনের ওপর প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে, শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই হচ্ছে দেশের অবস্থা।

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক এ এ এম ফয়েজ হোসেন, নির্বাহী সমন্বয়ক আব্দুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিকনেতা নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

‘হ্যাঁ’ ‘না’ পোস্টে সরগরম ফেসবুক 

সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় চলছে ‘হ্যাঁ’ ‘না&rsqu...

হামাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রশ্নে প্রায় ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি ঘোরবিরোধী

হামাস নিরস্ত্র হোক, চান না ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বেশির ভাগ ফিলিস্তিনি...

একদিনের ব্যবধানে আবারোও বাড়লো সোনার দাম

দেশের বাজারে এক দিনের ব্যবধানে সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ভরিতে ৮ হাজার ৯০০ টাকা...

আগামী জাতীয় নির্বাচনে এআই অপপ্রচার মোকাবিলাই বড় চ্যালেঞ্জ 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন জাতীয় নি...

সকাল থেকে মেট্রোরেলের চলাচল স্বাভাবিক

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় রাজধা...

একদিনের ব্যবধানে আবারোও বাড়লো সোনার দাম

দেশের বাজারে এক দিনের ব্যবধানে সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ভরিতে ৮ হাজার ৯০০ টাকা...

ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলা কলি’

সংরক্ষিত নির্বাচনী প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘শাপলা কলি&rsq...

কমিটি বাতিলের দাবিতে ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর...

নরসিংদী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হামলা

নরসিংদীতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।...

বিএনপি বিবাহে রাজি হয়েছে, কাবিননামায় সাইনও করেছে; 'না' বলার অপশন নাই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, "...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা