ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডজুড়ে চালানো ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৩৪০ ছাড়িয়ে গেছে। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চালানো এই হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু।
এমনকি ইসরায়েলের এই তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি নিজের বাড়িতেই অবস্থান করা ফিলিস্তিনি অন্তঃসত্ত্বা নারীও। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা।
চ্যানেলটি তাদের সরাসরি সম্প্রচারিত আপডেটে জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়েছে ইসরায়েল এবং এরপর অবরুদ্ধ এই উপত্যকা জুড়ে বিমান হামলা শুরু করেছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৪২ জন ফিলিস্তিনির নিহত এবং অন্যান্য আরো অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৪ জন।
এদিকে গাজার অবরুদ্ধ এবং অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাস বলছে, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করার জন্য ইসরায়েল অবরুদ্ধ ও অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিশ্বাসঘাতকদাপূর্ণ আক্রমণ চালিয়েছে।
এ ছাড়া আরেক ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার অভিযোগ করেছে। এই যুদ্ধবিরতি চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর ছিল।
আল জাজিরা বলছে, গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় এক গর্ভবতী নারী নিহত হয়েছেন। গাজা থেকে আল জাজিরার মারাম হুমাইদ বলেছেন, নিহত তিন শতাধিক ফিলিস্তিনির মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী এবং তার শিশুও রয়েছেন।
গাজার মধ্যাঞ্চলের নুসাইরাতের নিজেদের বাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় তারা নিহত হয়েছেন বলেও হুমাইদ জানিয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলি এক সামরিক কর্মকর্তা গাজায় স্থল আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করা ওই ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েলের আক্রমণ যতদিন প্রয়োজন ততদিন অব্যাহত থাকবে এবং বিমান হামলার বাইরেও বিস্তৃত হবে। যা গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের সম্ভাব্য স্থল অভিযানে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
গাজার পাশাপাশি সিরিয়াতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার জন্য হামাস যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং আরব লীগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে গাজা উপত্যকায় আরোপিত অন্যায্য অবরোধ ভাঙতে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে।
একইসঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস, যাতে ইসরায়েলকে তার আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করা যায়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করে গাজায় হামলা করেছে ইসরায়েল; এমনটি জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট।
মঙ্গলবার নিজেদের লাইভ আপডেটে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় সর্বশেষ আক্রমণ শুরু করার আগে ইসরায়েল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট।
সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন স্পষ্ট করে বলেছেন, হামাস, হুথি, ইরান— যারা কেবল ইসরায়েলকে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রকে আতঙ্কিত করতে চায়— তাদের মূল্য দিতে হবে এবং তাদের ওপর সমগ্র নরক ভেঙে পড়বে।
তিনি আরো বলেছেন, হুথি, হিজবুল্লাহ, হামাস, ইরান এবং ইরান-সমর্থিত সন্ত্রাসী প্রতিনিধিদের উচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেওয়া। কারণ তিনি (ট্রাম্প) বলেন যে— তিনি আইন মেনে চলা মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে এবং যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের বন্ধু ও মিত্র ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভয় পান না।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            