ফিলিস্তিনের গাজায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নাগরিকরাই দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ করে আসছেন। এমনকি বিশ্বব্যাপী বাড়ছে ফিলিস্তিনের পক্ষে ইহুদিদের সমর্থন। যুক্তরাষ্ট্রের বিপুলসংখ্যক ইহুদিও ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।
সম্প্রতি এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে, একদিকে ইহুদিবাদ ছড়িয়ে দেওয়া আর ফিলিস্তিন দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে ইসরায়েল। অন্যদিকে বিদেশে বসবাসকারী ইহুদি যুবকদের মধ্যে বাড়ছে ফিলিস্তিন ও হামাসের প্রতি সমর্থন।
এতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী মার্কিন-ইহুদি তরুণদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে। এ জরিপ পরিচালনা করেছে ইসরায়েলের প্রবাসীকল্যাণ ও ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ‘আমি হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল’ এ বক্তব্যকে ‘সমর্থন’ বা ‘কড়া সমর্থন’ দিয়েছেন ৩৬ দশমিক সাত শতাংশ মার্কিন-ইহুদি তরুণ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বসবাসকারী ইহুদি তরুণদের মধ্যে মাত্র সাত শতাংশ হামাসের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন।
জরিপে দেখা যায়, মার্কিন-ইহুদি তরুণদের ৪১ দশমিক তিন শতাংশ মনে করেন, গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বসবাসকারী ইহুদি তরুণদের মাত্র ১০ শতাংশ এমনটি মনে করে। মার্কিন-ইহুদি তরুণদের উল্লেখযোগ্য অংশ শুধু যে হামাসের প্রতিই সহানুভূতিশীল তা নয়, তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ তরুণ সার্বিকভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের ব্যাপারেও সহানুভূতিশীল।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় সাত হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় এক লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে।
গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে... দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এ অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এ অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।’
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            