জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দায়িত্বরত পুলিশের সাজা বাড়ানোর প্রস্তাবসহ নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইনের সংশোধনী কমিশন সভায় উঠছে আজ। এতে কারাদণ্ড ও আর্থিক দণ্ডের পরিমাণও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ গুরুত্ব দিয়ে এ খসড়া তৈরি করেছে ইসি সচিবালয়। নির্বাচনে আইনি ব্যত্যয় ঘটালে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাজার পাঁচ বছর করার যে প্রস্তাব নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন করেছে, আজকের সভায় সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সভায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধান আইন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ’ (আরপিও) সংশোধনী এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইনের সংশোধনী এজেন্ডাভুক্ত রয়েছে। সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ চলাবস্থায় এসব আইনের সংশোধনীর ওপর বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এটি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অষ্টম সভা।
সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইনের সংশোধনীতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের পৃথক সার্ভিস কমিশন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা কার্যক্রম এ আইনের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আরপিও সংশোধনী প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে পারেনি ইসি সচিবালয়।
সূত্র আরো জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানালে অথবা দায়িত্ব পালনে গাফিলতি বা অপরাধে যুক্ত হলে তাকে নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন, ১৯৯১ এর আওতায় সাজা দেয় নির্বাচন কমিশন। খসড়ায় নির্বাচন কর্মকর্তার সংজ্ঞায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।
খসড়ায় নির্বাচনি দায়িত্ব পালনে অনিয়ম বা অসদাচরণ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তার সাজা এক বছর থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫ বছর সাজার প্রস্তাব করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। আর অর্থদণ্ড ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এ প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগত একমত হয়েছে। তবে কারাদণ্ড পাঁচ বছর হবে কি না-তা আজ চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া দায়ী কর্মকর্তার চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদাবনতিসহ অন্যান্য যে সাজা আগে ছিল, তা বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিদ্যমান আইনে ইসি কোনো কর্মকর্তাকে সাজা দিলে তা পালন করে ওই কর্মকর্তার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। অনেকক্ষেত্রে দায়ী কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সাজা কার্যকর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনকে তা জানানোর বিধান যুক্তের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আমারবাঙলা/জিজি