আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। আগামী শনিবারের এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে পালনে দলটির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর আলী খান।
রাওয়ালপিন্ডিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পিটিআইয়ের এই নেতা ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছেন। এ সময় পিটিআই নেতা গহর আলী খান নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে বিক্ষোভ পালন করে আসা জামায়াত-ই-ইসলামি, জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজলসহ (জেইউআই-এফ) অন্যান্য দলগুলোকেও পাশে চান।
তিনি বলেন, এই উদ্দেশ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। যারা বিশ্বাস করেন যে ম্যান্ডেট পরিবর্তন এবং কারচুপি হয়েছে। গহর আলী খান বলেন, পিটিআই আগামী শনিবার বিকেলে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-প্রতিবাদের রেকর্ড করবে। বিক্ষোভে জনসাধারণকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পিটিআইয়ের এই চেয়ারম্যান বলেন, এবারের এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা আমাদের ম্যান্ডেট চুরি হতে দেব না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে জোট সরকার গঠনের আলোচনার তথ্য অস্বীকার করেছেন গহর খান।
এর আগে, দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ রাজনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান সরকার গঠনের বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর রাজনৈতিক দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সাথে আলোচনায় রাজি হয়েছেন। নির্বাচনের পরপর পিপিপির সাথে জোট সরকারের আলোচনা নাকচ করে দিলেও ইমরান খান সেই সুরে পরিবর্তন এনেছেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার দলীয় একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজ জানায়, কারাবন্দি ইমরান খান সরকার গঠনে পিপিপির সাথে আলোচনা করতে ‘‘প্রস্তুত’’। সূত্রগুলো বলেছে, ‘‘দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া হবে। সরকার গঠন নিয়ে পিটিআই ও পিপিপির মধ্যে আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করা হবে।’’
গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু দলটির নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করতে পারছে না। যে কারণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয় পাওয়া পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) কেন্দ্রে জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে পিপিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সাথে জোট গড়ার চেষ্টা করছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও দলই সরকার গঠনের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়নি।
নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৯টি ও বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৩টি আসনে জয় পেয়েছে। দেশটিতে কোনও দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ব্যাপক রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামি এবং অন্যান্য জাতীয়তাবাদী দলগুলোর মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথেও জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনার পরিকল্পনা করেছে পিটিআই। এসব রাজনৈতিক দল দেশটিতে নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। সূত্র: জিও নিউজ।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            