বয়স এখনো ৩০ হয়নি। দলে তাঁর গুরুত্বও কমেনি। তবে সামনে লম্বা সময় পড়ে থাকলেও ২৯ বছর বয়সেই থামার কথা বললেন নিকোলাস পুরান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান আজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্ব দেওয়া পুরান এমন সময়ে জাতীয় দল ছাড়লেন, যখন তিনিই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ ও সবচেয়ে বেশি রানের মালিক।
২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন পুরান। গত ৯ বছরে কোনো টেস্ট খেলেননি, খেলেছেন শুধু ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। ৬১ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটিও ২০২৩ সালের। এর পর থেকে শুধু টি-টোয়েন্টিই খেলে যাচ্ছিলেন।
এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টও খেলে যাচ্ছিলেন সমানতালে। সর্বশেষ ২০২৪ সালেই যেমন টি-টোয়েন্টি সংস্করণে সর্বোচ্চ ১৭০টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলেছেন গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
পুরান সর্বশেষ মাঠে নেমেছেন সদ্য সমাপ্ত আইপিএলে। এই টুর্নামেন্টে লক্ষ্ণৌর হয়ে ৫০০ রান করার পথে মেরেছেন আসরের সর্বোচ্চ ৪০ ছক্কা। আইপিএল শেষ হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ইংল্যান্ড সিরিজ থাকলেও পুরান সেটিতে অংশ নেননি। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে এবার সিরিজ থেকে নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভবিষ্যতের সব খেলা থেকেও নাম সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এক ইনস্টাগ্রাম বার্তায় পুরান লিখেছেন, ‘মেরুন জার্সি গায়ে জড়ানো, জাতীয় সংগীতের সময় দাঁড়িয়ে থাকা, আর মাঠে নামলে প্রতিবার নিজের সবটুকু উজাড় করে দেওয়া... এসব আমার কাছে আসলে কতটা গুরুত্ব বহন করে, তা শব্দে প্রকাশ করা খুব কঠিন। দলের অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়া আমার জীবনের এক অসাধারণ গৌরব, যা আমি আজীবন হৃদয়ে ধারণ করব। আমার ক্যারিয়ারের আন্তর্জাতিক অধ্যায় শেষ হয়ে গেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালোবাসা কখনোই ম্লান হবে না।’
পরে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লিউআই) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নিকোলাস আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটাল। একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড় এবং ম্যাচের মোড় ঘোরানো তারকা হিসেবে নিকোলাস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা (১০৬টি) এবং সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (২,২৭৫ রান) হিসেবে বিদায় নিচ্ছেন। মাঠে তাঁর পারফরম্যান্স এবং দলের ভেতরে তাঁর প্রভাব ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছে।’
আমারবাঙলা/জিজি