শিবগঞ্জের শাহাবাজপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ি হতে বিনোদপুর ইউনিয়নের খাকরাটোলার মোড় পর্যন্ত ১৬ কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৩ কিলোমিটার রাস্তা পুর্ণনির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার পেতে স্থানীয় জনগণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন কাজ যথারীতি নিয়মমাফিক চলছে। কোন ধরনের অনিয়ম নেই। সোমবার সকালে সরজমিনে উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের নামো চকপাড়া গ্রামে দেখা গেছে, রাস্তায় বিটুমিন না দিয়েই পিচ দেয়ার কাজ শুরু করলে স্থানীয় জনগণ কাজে বাধা দেয়।
নামো চকপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, মাসুম, মুকুল,তারিক দুলাল উদ্দিন, পারুল বেগম, মেরিনা বেগম সহ প্রায় ৫০/৬০ নারী পুরুষ জানান, রাস্তা ভালভাবে করার জন্য আমরা বারবার অনুরোধ করেও আমাদের কথায় কর্ণপাত না করায় বাধ্য হয়ে কাজে বাধা দিয়েছি। আমরা আজও দেখেছি রাস্তায় বিটুমিন না দিয়েই পিচ দিচ্ছে। এভাবেই প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার রাস্তায় পিচ দেয়ার কাজ শেষ করেছে। আমাদের দাবি রাস্তায় বিটুমিন না দিয়েই যতটুকু রাস্তায় পিচ দেয়া হয়েছে তা উঠিয়ে ফেলে পুন:রায় বিটুমিন দিয়ে পিচ দিতে হবে। শুধু তাই নয় অন্যান্য ক্ষেত্রে যা অনিয়মের মাধ্যমে রাস্তার কাজ করা হয়েছে তা সঠিক ভাবে করে দিতে হবে।
তারা আরো জানান, গতকাল রবিবার দুপুরে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী রাস্তার কাজে অনিয়মের ছবি তোলার সময় ঠিকাদারের সাব ইঞ্চিনিয়ার শাহীন আলম তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার সহ আমরা তার একাজে বাধা দিলে শাহীন আলম সরে যায়।
সরজমিনে আরো দেখা গেছে উপর চকপাড়া গ্রামের ত্রিমোহনী জামে মসজিদ থেকে দক্ষিণে রফিক উদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত প্রশস্তু করনের জটিলতায় প্রায় সাত শো মিটার রাস্তার কাজ বন্ধ আছে বলে এলাকাবাসী জানান। তাছাড়া মাঝে মাঝে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। ছোট ছোট ভাঙ্গা কালভাটগুলো এখনো পুন:রায় নির্মাণ করা হয়নি। উপর চক পাড়া গ্রামের ত্রিমোহনী মসজিদের সামন থেকে ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তার দুই দিকে রাস্তার পাশ ঘেঁষে নিচু হলেও কোন প্রটেকশন ওয়াল নেই। রাস্তার কয়েক স্থানে পানি জমা থাকায় স্থানীয়দের চাপে পুন:রায় উচুঁ করা হচ্ছে।
তাছাড়া স্থানীয়দের ভাষ্যমতে রাস্তার মাঝে প্রায় ১০/১২ গাছ আছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আব্দুল মান্নান জানান, বিটুমিন না দিয়ে রাস্তায় পিচ দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। তবে সেটা দেয়ার পর বৃষ্টি হওয়ায় অনেকটা ধুয়ে গেছে। তাই চোখে পড়ে না। ১৩ কিলোমিটার রাস্তায় মোট চারটি ছোট ছোট কালভার্ট ভেঙ্গে গেছে। তা অবশ্যই পুন:নির্মাণ করা হবে। তবে এটা দেরীতেও করা যায়। শাহাবাজপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়ির সামন থেকে দক্ষিণে প্রায় ৪২০ মিটিার রাস্তা প্রশস্থ করনে জটিলতার কারণে কাজ বন্ধ আছে। অতি শীঘ্রই সেই সমস্যার সমাধান হবে। রাস্তার মধ্যে গাছ কাটার এখতিয়ার আমাদের নেই। বন বিভাগকে জানানো হয়েছে। আশা করি তাড়াতাড়ি টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলি কেটে নেয়া হবে। শুধু তাই নয়, রাস্তার কাজ শেষ করার পর আরো দুই বছর আমাকে রাস্তার দেখাশুনা করতে হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ বলেন ঘটনাটি আমার জানা ছিল না। এখন জানলাম, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আজাহার আলি বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়ম ও গণমাধ্যমে কর্মীদের সাথে দূর্ব্যবহার করার ব্যাপারে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আমারবাঙলা/ইউকে